প্রকৃত রাজনীতিকরাই যেন নেতৃত্বে আসেন
কাজী সিরাজ
মানুষ সবসময়ই যোগ্য নেতৃত্ব প্রত্যাশা করে। আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনেও যোগ্য নেতৃত্ব আশা করছে মানুষ। নতুন নেতৃত্বে তাদেরই আসার যোগ্যতা রাখেন, যারা আজীবন রাজনীতিতে একনিষ্ঠতার প্রমাণ রেখেছেন, নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন, যারা প্রকৃতই রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যারা সিভিল আমলা, মিলিটারি আমলা, ব্যবসায়ী এবং টাকাপয়সার মালিকেরা যেন কোনোভাবেই নেতৃত্বে না আসে। নতুন নেতৃত্বে প্রকৃত রাজনৈতিক কর্মী, রাজনৈতিক নেতাদের আসতে হবে। প্রকৃত রাজনীতিকের হাতে নেতৃত্ব থাকলে একসময় না একসময় তাদের নেতৃত্বগুন বাড়বে এবং নেতৃত্ব কী তা শিখতে পারবে। একসময় তার ফল পাবে দেশ ও জনগণ।
আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। দলটি এখন ক্ষমতা, তাদের উচিত গণতন্ত্র যেন পুনরুজ্জীবিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। কারণ এই দলটির জন্মই হয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মানসিকতার মধ্যে দিয়ে। কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে এ দলের জন্ম হয়েছে। এখন যারা আওয়ামী লীগ করেন তাদের অনেকেই মনে করেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কেউ কেউ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কথাও বলেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য তথ্য হচ্ছেÑ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেনÑ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। তিনি টানা ৮ বছর দলটির সভাপতি ছিলেন। পাকিস্তান আমলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল মওলানা ভাসানীর হাত ধরে। ঐতিহ্যের সেই আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। মানুষ এটাও প্রত্যাশা করে দলটি যেন গণতন্ত্র চর্চা করে।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু আজীবন লড়াইসংগ্রাম করে গেছেন। তিনি সংসদীয় শাসনব্যবস্থা বিশ্বাস করতেন বলেই এখনো পর্যন্ত দলটি কোনো জাতীয় নির্বাচন বর্জন করেনি। প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। শাসক দলের কাছে সবার প্রত্যাশা, ২০তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আজ অবধি যত ধরনের ভুল-ভ্রান্তি হয়েছে সবকিছুর উর্ধ্বে থেকে তা সংশোধনে আগ্রহী হবে, গণতন্ত্র চর্চা করবে, গণতান্ত্রিক কর্মকা- অনুসরণ করবে। দেশের যত রাজনৈতিক শক্তি বা সংগঠন রয়েছে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে। সকলকেই গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ দিতে হবে, অধিকার দিতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন যদি তাদের অধীনেই অনুষ্ঠিত হয় তাহলে যেন অন্তত অবাধ, সুষ্ঠু ও সর্বজনস্বীকৃত নির্বাচনের ব্যবস্থাটি করা হয় সেটাই এখন সবার প্রত্যাশা।
পরিচিতি: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা: আশিক রহমান