রপ্তানি না বাড়লে বিপর্যয় ঘটবে পানচাষে
ফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার : কক্সবাজারের মিষ্টিপান রপ্তানি না বাড়লে বিপর্যয় নেমে আসবে মিষ্টিপান চাষে এমনটি বলেছেন পান চাষিরা। পানের উৎপাদন খরচ দ্বিগুণ হলেও এখন পাইকারী বাজারে পান বিক্রি হচ্ছে পানির দরে। তাই পান চাষে বিনিয়োগ করে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
মিষ্টি পানের জন্য বিখ্যাত মহেশখালীর পানচাষিদের মুখে এখন হাসির হাসি নেই। গত মৌসুমে সর্বোচ্চ দামে পান বিক্রি হলেও এখন পানির দরে বিক্রি হচ্ছে পান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কক্সবাজারের মিষ্টিপানের বিপুল চাহিদা থাকলেও রপ্তানি বাড়াতে উদ্যোগ না থাকায় থমকে দাঁড়িয়েছে পান চাষ।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দেশের সর্বোচ্চ মিষ্টিপান উৎপাদন হয় কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায়। এ ছাড়াও চকরিয়া, পেকুয়া, রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়ও সীমিত আকারে উৎপাদন হয় মিষ্টিপান।
জানা যায়, কক্সবাজার জেলা থেকে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন পান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মিষ্টিপানের বিরাট চাহিদা রয়েছে। ক্রেতারা মিষ্টিপান চাইলেও বাজারে না থাকায় খেতে পারেন না। এ ছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটা বড় অংশ কক্সবাজারের মিষ্টিপানের গ্রাহক। মধ্য প্রচ্যের দুবাইতে কর্মরত মহেশখালীর ফরিদুল আলম জানান, মিষ্টিপান দুবাইয়ে অন্যতম আকর্ষণ। দুবাইতে এক খিলি পানের দাম বাংলাদেশি টাকায় ৫০ টাকা। পর্যায়ক্রমে আরো বেশি দামে বিক্রি হয় পান। কিন্তু এত চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সহজে পান পাওয়া যায় না। যারা আমদানি করেন তারা খুব সীমিত আকারেই পান এনে থাকেন।
একই কথা জানালেন সৌদি আরবে বসবাসরত নুরুল আবচার।
তিনি আরো জানান, সৌদি আরবে মিষ্টিপানের চাহিদা ব্যাপক। বাংলাদেশি ছাড়াও আরব দেশের যারা পান খায় তাদের বড় অংশ মিষ্টিপানের গ্রাহক। যারা মিষ্টিপানের ব্যবসা করেন তারা এখন কোটি টাকার মালিক কিন্তু তাদের কে পর্যাপ্ত পরিমাণ পান আমদানির অনুমতি না দেওয়ায় চাহিদামত পান সরবরাহ করতে পারেন না। সৌদি আর পান আমদানি উম্মুক্ত করলে প্রতি বছর ২ হাজার কোটি টাকার পান রপ্তানি করতে পারবে বাংলাদেশ।
মহেশখালীর শীর্ষ পান ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মিয়া জানান, বর্তমানে পানের বাজার যে অবস্থায় এতে চাষিরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বর্তমান অবস্থায় উৎপাদন খরচের ২৫ ভাগ টাকাও চাষিরা পাবে না। তাই পান রপ্তানি না বাড়ালে কক্সবাজারের প্রায় ৩ লাখ পান চাষি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইতোমধ্যে মৌসুমী মিষ্টিপানের চাষ শুরু হয়েছে। সম্পাদনা : তারেক