শ্রীনগরে নতুন করে কারফিউ জারি পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে পুরনো মামলা
ইমরুল শাহেদ : আন্দোলনের ১০৫ দিনে এসে জম্মু-কাশ্মীরের ঘটনা প্রবাহ আরও গভীর আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। দি হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার জুমার নামাজের আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজধানী শ্রীনগরের জামিয়া মসজিদ ও শহর এলাকায় কারফিউ জারিসহ সমগ্র কাশ্মীর জুড়ে নাগরিকদের ওপর বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। কাশ্মীরের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে কাশ্মীরের ছয়টি থানা এলাকায় কারফিউ জারি করা হয় ও বাকি উপত্যকায় আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একসঙ্গে চারজন লোকের জড়ো হওয়ার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এছাড়াও, প্রধান প্রধান সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলেও ওই কর্মকর্তা জানান। কাশ্মীরে এখনো হরতাল অব্যাহত আছে। বন্ধ আছে দোকানপাট। হুরিয়াত কনফারেন্স (এম) চেয়ারম্যান মীরওয়াইজ উমর ফারুক বলেছেন, শুক্রবার নওহাটা চকে বেশকিছু লোক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের জন্য জড়ো হলে পুলিশ তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশ বেশকিছু টিয়ার-গ্যাস শেল নিক্ষেপ করে। এমনিতেই আন্দোলনের কারণে উপত্যকায় স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দি স্টেটসম্যান জানিয়েছে, কর্র্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে ৮ম, ১০ম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। তবে শিক্ষার্থীরা চলমান অস্থিরতার মধ্যে পরীক্ষা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে শ্রীনগর ও পাম্পর শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যখন জম্মু কাশ্মীরের সরকার চলমান প্রতিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে ডজন খানেক ব্যক্তিকে চাকরিচ্যুত করেছে। ঠিক তখনই নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো।
গ্রেটার কাশ্মীরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৮ ও ২০১০ সালের বিক্ষোভের সময় পুলিশ যেসব এফআইআর রেজিস্ট্রি করেছিল সেগুলো নতুনভাবে পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে। গত তিন সপ্তাহ থেকে পুলিশ যাদের নামে এফআইআর আছে হয় তাদের বাড়িতে তল্লাশি করছে অথবা তাদের থানায় ডেকে নিচ্ছে। তাদের আবারো গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু কাশ্মীরীরা এ সংকট উত্তরণের জন্য নানাভাবেই চেষ্টা করছে। জঙ্গিদের চাওয়া ও সাধারণ মানুষের চাওয়া প্রায় একসূত্রে গ্রথিত হতে শুরু করেছে সেখানে।
গত বৃহস্পতিবার পুঞ্চে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বিজেপিকে তোপ দেগে ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের প্রধান সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা বলেন, ‘ভোটে জেতার জন্য আজ আমরা আমাদের জওয়ানদের রক্ত বিক্রি করতে চাইছি? অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, আমরা জওয়ানদের রক্ত নিয়ে ব্যবসা করতে চাইছি… কিন্তু মনে রাখতে হবে একজন জওয়ান কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের হয় না, তিনি গোটা দেশের।’
অন্যদিকে পাকিস্তানি সংবাদপত্র ডনের বরাত দিয়ে দৈনিক গণজাগরণে বলা হয়ছে, হিজবুল প্রধান সালাউদ্দিন দাবি করেছে, আলোচনার মাধ্যমে কখনই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আর তাই সেনা ও মুজাহিদিনরা একযোগে কাশ্মীরের মানুষের পাশে দাঁড়ালে, ভারত থেকে পৃথক করা যাবে কাশ্মীরকে। সম্পাদনা : মাহমুদুল আলম