আরিফ: ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, ৭ মার্চসহ বাঙালির প্রতিটি স্বাধিকার আন্দোলনে অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মাইক কোম্পানি কল-রেডী। আওয়ামী লীগসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশে নিয়মিত ব্যবহৃত হচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানের মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম। আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনেও থাকবে কল-রেডী। সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট টিভি
১৯৪৭ সালে বিক্রমপুরের শ্রীনগর থেকে ঢাকায় এসে মাইকের ব্যবসা শুরু করেন দুই ভাই দয়াল ঘোষ ও হরিপদ ঘোষ। লক্ষ্মীবাজারের ছোট একটি দোকানে ‘আর্য লাইট হাউস’ নামে শুরু হয় ব্যবসা। ১৯৪৮ সালে আর্য লাইট হাউসের নামকরণ হয় ‘কল-রেডী’।
কল-রেডীর পরিচালক সাগর ঘোষ বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, ঊনসত্তর-এর গণঅভ্যুথান, ৭০-এর নির্বাচন, তথাপি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের সেই ভাষণ থেকেই কল-রেডী একটা উচ্চতায় পৌঁছে যায়। যুগান্তকারী ঘটনার সাক্ষী হিসাবে আমাদের মাইক ব্যবহার হয়েছিল। যে মাইক দিয়ে স্বাধীনতার ডাক দেওয়া হলো আজও সেই মাইকের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি’।
কল-রেডী সাধারণ এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস।
একাত্তর পূববর্তী সময়ে মওলানা ভাসানী, কমরেড মণি সিংহ, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনসভা মানেই ছিল কল-রেডীর মাইক। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু এ প্রতিষ্ঠানের মাইকেই দেন তার ঐতিহাসিক ভাষণ।
কল-রেডীর প্রতিষ্ঠাতা দুই ভাইয়ের কেউ বেঁচে নেই তবে লক্ষ্মীবাজারের একই জায়গায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানের একমাত্র ঠিকানা। দেশের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যাওয়া এই প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি না পাওয়ায় আক্ষেপ রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে বদলে গেছে কল-রেডীর ব্যবস্থাপনা। পুরনো দিনের সরঞ্জামের কিছু ব্যবহার থাকলেও উন্নত এবং আধুনিক ‘সাউন্ড সিস্টেম’ সংযোজিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি