ফেসবুকে বাংলাদেশ…
দীর্ঘ সময় উচ্চহারে মুনাফা লুটেছেন
সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, পরিচালক বার্তা, একাত্তর টিভি
সিটিসেল বন্ধ হলো, তবে মোরশেদ খানের কামাই কম হয়নি। মনোপলি ব্যবসা করেছেন। রাষ্ট্র দুর্নীতি করে তাকে এই সুবিধা দিয়েছিল। দীর্ঘ সময় উচ্চহারে মুনাফা লুটেছেন। ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেসে থাকতে এই মনোপলি ভেঙে দিয়ে বাজার আরও প্রতিযোগিতামূলক করার রিপোর্ট করায় ক্ষেপে গিয়েছিলেন একদল সাংবাদিকও। তারা তো দেখি এখন বড় বড় পদে, খুব সুশীল কথাবার্তা বলেন।
জাতির ভাগ্য ভালো শেখ হাসিনা মোবাইল ফোনের বাজার খুলে দিয়েছিলেন, ফলে মানুষ এখন কম খরচে কথা বলছেন, সবার হাতে হাতে ফোন সেট।
রোগী বা তাদের স্বজনরা কি জনগণ নয়?
প্রভাষ আমিন, অ্যাসোসিয়েট হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ
আওয়ামী লীগের কাউন্সিল বেশ স্বাস্থ্যকর ব্যাপার। প্রতিদিন কাউন্সিল হলে বারডেম হাসপাতালের আর দরকার হবে না। কড়া রোদের অত্যাচারটুকু বাদ দিলে হেঁটে অফিসে আসতে খারাপ লাগছিল না। শুধু আমি নই, হাজার-হাজার মানুষ হাঁটছে। হাঁটতে হাঁটতে আমার মনে হচ্ছিল, বিএনপি, সুন্দরবন রক্ষা কমিটি বা অন্যকোনো বিরোধী মতের ছোট একটা মিছিল হলেও পুলিশ জনদুর্ভোগের কথা বলে তা ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কিন্তু আজ রাস্তায় যে হাজার হাজার মানুষ, বুয়েটে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী, বারডেম, বিএসএমএমইউ বা ঢাকা মেডিকেলের রোগী বা তাদের স্বজনরা কি জনগণ নয়? নাকি তাদের দুর্ভোগ দুর্ভোগ নয়?
ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনো চেষ্টা কি করা হবে?
প্রণব সাহা, সম্পাদক, ডিবিসি নিউজ
আচ্ছা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন হলে জাতীয় রাজনীতিতে কি সুফল আসবে? পরবর্তী নির্বাচনে কি জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে? ১০ টাকার চালে তৃণমূলে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা কি বন্ধ হবে? নতুন সাধারণ সম্পাদক কি ভাতৃপ্রতিম ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনো চেষ্টা কি করা হবে? সরকারের নীতি বা তার সফলতা প্রচারে কি সচেষ্ট হবে নতুন নেতৃত্বের আওয়ামী লীগ? সারাদেশে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি থেকে দলের নেতাকর্মীদের দূরে রাখার চ্যলেঞ্জ কিভাবে মোকাবেলা করবেন নতুন সাধারণ সম্পাদক? পুরনো সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ পুনঃনির্বাচিত হলে উনি জেলা নেতাদের জন্য আরও বেশি সময় দিবেন কি? ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হলে উনি আর নতুনত্ব কী করবেন দলে?
আমাদের কি কোনো চক্ষুলজ্জা নেই?
আশীফ এন্তাজ রবি, সাংবাদিক ও সঞ্চালক
বাংলাদেশকে বাঁচানোর উপায় একটাই, পুরো দেশকে বাংলাদেশের রাজধানী ঘোষণা করা। চীনের প্রেসিডেন্ট আসলে রাস্তা বন্ধ, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট আসলে বন্ধ, আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে তাও রাস্তা বন্ধ। অবশ্য কর্তৃপক্ষ ‘রাস্তা বন্ধ’ এ কথাটি বলেন না। তাদের সরকারি ভাষা অতি চমৎকার। তারা বলেন, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
যানজটে এমনিতেই ত্রাহি অবস্থা। এরপর যদি ‘যানবাহন নিয়ন্ত্রণ’ করা হয়, তাহলে যে পরিস্থিতি দাঁড়ায়, বাংলা ভাষায় একটি শব্দই আছে, যেটা দিয়ে সেই পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা যায়। নারকীয়। একটা শহরকে কীভাবে নরক বানানো যায়, আমাদের চেয়ে এটা ভালো আর কেউ পারবে না।
অফিস, আদালত, স্কুল-কলেজের কথা বাদই দিলাম। কিন্তু যারা রোগী, যারা মরণাপন্ন তাদের কী দুর্বিষহ অবস্থা হয়, এটা ভাবার কেউ কি আছেন দেশে? কেউ কি আছেন? সরকারে? মন্ত্রণালয়ে? সংসদে? নীতিনির্ধারক মহলে? একটা মানুষ এটা নিয়ে ভাববেন? কাজ করবেন? মতিঝিলে একটা ভবন আছে। এর নাম বাংলাদেশ চা বোর্ড। ঢাকায় কোনো চা বাগান নেই। তাহলে চা বোর্ডটা কেন ঢাকায় করতে হবে? বুড়িগঙ্গায় কোনো মাছ নেই। তাহলে মৎস্যভবন কেন ঢাকায় থাকবে? ঢাকায় কেউ ধান চাষ করেন না, তাহলে ফার্মগেটে কেন খামারবাড়ি থাকবে?
ছোট্ট একটা দেশ। এই দেশকে ডি সেন্ট্রালাইজ করা কি খুব বেশি কঠিন? চা বোর্ডকে সিলেটে নিয়ে যাওয়া, মৎস্যভবন চাঁদপুরে কিংবা ফরিদপুরে খামারবাড়ি?
না। এটা অনেক সহজ কাজ। কিন্তু সহজ কাজ আমরা করব না। আমরা করব জটিল কাজ। কারণ জটিল কাজ করলে মানুষ কষ্ট পায়। মানুষকে কষ্ট দেবার নামই যে রাজনীতি। নইলে পাবলিক বুঝবে কেমনে যে, উনারা রাজা আর আমরা প্রজা। আমি অবাক হয়ে ভাবি আর ভাবি। আমাদের কি কোনো চক্ষুলজ্জা নেই?
পৃথিবীর সব সুন্দরেরই জন্ম হয়েছে প্রতিবাদ আর লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে
মনজুরুল আলম পান্না, সাংবাদিক
মহান একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে বিচ্ছিন্নতাবাদী, ভারতের চর, রাশিয়ার দালাল বলা হয়েছে। তাই বলে কি থেমে ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা? থেমে থাকলে কি আর জয় করা যেত চির সবুজ এই বাংলাকে? সুন্দরবনকে বাঁচাতে, চির সবুজ রাখতে আজ যারা সোচ্চার, ঠি…ক একইভাবে পাকি দালালদের মতো তাদেরকে বলা হচ্ছে উন্নয়নবিরোধী, ভারতবিরোধী, জঙ্গি, বামাতি। তাই বলে কি এবারও থেমে থাকবেন জাতির সূর্য সন্তানেরা? ইতিহাসের কি অদ্ভুত পুনরাবৃত্তি!
এবারও সুনিশ্চিত জয় আমাদের। পৃথিবীর সব সুন্দরেরই জন্ম হয়েছে প্রতিবাদ আর লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। সুদীর্ঘ ইতিহাস তাই-ই সাক্ষ্য দেয়।
না চাওয়াটাই হচ্ছে তার প্রতারণা
স্বকৃত নোমান, কথাসাহিত্যিক
শিল্প-সাহিত্য কি নিজের জন্য? অর্থাৎ যিনি শিল্পী, যিনি সাহিত্যিকÑ তিনি কি শিল্প-সাহিত্য নিজের জন্যই করেন? কোনো কোনো লেখককে খুব গর্ব করে বলতে শোনা যায়Ñ আমি নিজের জন্য লিখি। আচ্ছা, তিনি যদি নিজের জন্যই লিখেন, তাহলে লেখার খাতাগুলো বালিশের তলায় না রেখে পত্রিকায় ছাপতে দেন কেন? প্রকাশককে প্রকাশ করতে দেন কেন? কিংবা যিনি নিজের জন্য গান, তিনি দরজা বন্ধ করে অথবা বাথরুমে বসে গান করেন না কেন? তিনি কেন রেডিও-টেলিভিশনে গাইতে যান? কেন অ্যালবাম বের করেন? কিংবা শিল্পী নিজের চিত্রকর্মগুলো নিয়ে কেন এক্সিবিশন করতে যান? একে একে নিজের ঘরে রেখে দিলেই তো হয়।
তার মানে ‘নিজের জন্য লিখি, নিজের জন্য গাই, নিজের জন্য আঁকি’Ñ যারা এই কথাগুলো বলেন, তারা হয় অজ্ঞতার কারণে বলেন, নয় তার পাঠক, শ্রোতা ও দর্শকদের সঙ্গে মিথ্যা বলেন। মূলত তিনি নিজেকে প্রকাশ করতে চান, নিজের কৃত্তিকে অন্যের কাছে তুলে ধরতে চান। শুধু প্রকাশ ও তুলে ধরাতেই তিনি ক্ষান্ত হন না, বাহবাও কুড়াতে চান। কিন্তু তার এই গোপন চাওয়াটাকে তিনি প্রকাশ করতে চান না। না চাওয়াটাই হচ্ছে তার প্রতারণা। তিনি প্রতিনিয়ত প্রতারণা করে যান। তিনি নিভৃতচারিতার মুখোশ পরে থাকেন।
তথাকথিত নিভৃতচারিতা মূলত একটা ভ-ামি। নয় কি? শব্দটা কি খুব কঠিন হয়ে গেল? হয়তো। কিন্তু এর বিকল্প কোনো শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না। বলা হয়, তিনি নিভৃতচারী লেখক। তা এই নিভৃতচারী ব্যাপারটা আসলে কী? তিনি কি পাঠকের কাছে নিজের বইটি তুলে দিতে চান না? নিজের গানটি শ্রোতাদের শোনাতে চান না? নিজের আঁকা চিত্রকর্মটি দর্শকদের জন্য প্রদর্শন করতে চান না? সবই তিনি চান। তাহলে তার নিভৃতচারিতাটা থাকল কোথায়?……