এবারের সম্মেলনেই জয়কে চান আওয়ামী লীগনেতারা
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় হতে পারবেন বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি। এবারের সম্মেলনেই জয়কে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা।
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা নেতাদের প্রত্যেকের বক্তব্যেই জয়কে আওয়ামী লীগের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। তবে গত কিছুদিন ধরেই দলের সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের অভিষেক হওয়ার উপযুক্ত সময় বলে উল্লেখ করেন। এমনকি গতকাল সৈয়দ আশরাফই সজীব ওয়াজেদ জয়কে নেতৃত্বে নিয়ে আসার বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন। তিনি কাউন্সিলর সারিতে বসা জয়কে জোর করেই মঞ্চে তুলে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যের আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দ্বিতীয় দফা বক্তব্য প্রদান করতে গিয়ে বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়কে বাংলাদেশের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিতে হবে। জয় ও জয়ের বন্ধুরা আগামীদিনের নেতৃত্বে আসবেন। আমাদের বয়স হয়ে গেছে। জয়ের মতো তরুণরাই আগামীদিনে দেশ ও রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবেন।
সজীব ওয়াজেদ জয়কে উদ্দেশ্য করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, জয় তুমি দাঁড়াও। তোমাকে কাউন্সিলররা দেখতে চায়। আগামীদিনের বাংলাদেশে তোমাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। ধারাবাহিকতায় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তোমাকে নিতে হবে। আমরা একসময় চলে যাব।
এ সময় সজীব ওয়াজেদ জয় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বক্তব্যে বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু জয়কে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কা-ারি উল্লেখ করে তাকে করতালির মাধ্যমে বরণ করার আহ্বান জানান। এসময় সম্মেলনস্থল মুহুর্মুহু করতালিতে ছন্দময় হয়ে উঠে। এরপর শম্ভু বলেন, বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারী সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে-বিদেশে ইতোমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি শিক্ষিত, মেধাবী ও যোগ্য। তাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে আনার দাবি জানাই।
ধীরেন্দ্র দেবনাথ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনার সন্তান জয় আজ ষোলো কোটি মানুষের গর্ব। আপনার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিতে পারবেন জয়। দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আপনি যে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন, সে যুদ্ধ শেষ করেই কেবল আপনি বিদায় নিতে পারবেন। এছাড়া আপনাকে আমরা বিদায় দিতে পারব না।
এরপর সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, জয়ই হবে ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারক। কারণ, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে যে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করা হয়। এর উদ্ভাবক জয়। ইতোমধ্যেই জয় তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে তাকে দেখতে চাই’।
রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্ত, শেখ হাসিনার সন্তান জয়কে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে নিয়ে এসে উপযুক্তস্থানে দেওয়া হোক। জয় আমাদের মধ্যমণি। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারী।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়কে নেতৃত্বে দেখতে চাই। তিনি দায়িত্ব পালন করলে আওয়ামী লীগ আরও এগিয়ে যাবে।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উত্তরসূরি দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে যিনি নেতৃত্বে আসবেন, তার নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে।
আগামীদিনের কমিটিতে জয়কে সম্মানজনক জায়গা রাখার দাবি জানিয়ে খুলনা জেলার সভাপতি হারুন অর রশীদ বলেন, জয় আগামীদিনের পাইওনিয়র। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়কে যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চাই। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, আওয়ামী লীগের তরুণ নেতৃত্বের অহঙ্কার জয়। শেখ হাসিনা বিকাল ৫টার দিকে কাউন্সিল অধিবেশন আগামীকাল সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আগামীকাল জেলা নেতারা তিন মিনিট করে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন। আশা করি, আপনারা এ সময়ের মধ্যে বক্তব্য রাখবেন এবং জেলার সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করবেন। এরপর আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধন ও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যাব। নতুন নির্বাচনের জন্য যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন’। সম্পাদনা : রিকু আমির