২০তম কাউন্সিলে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা তৃতীয় দফা জয়ী হতে মানুষের কাছে যাওয়ার নির্দেশ
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: এবারের কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের অষ্টমবারের মতো নির্বাচিত সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশনায় তিনি বলেন, উন্নয়ন ও পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগকে তৃতীয় দফা নির্বাচনে জয়ী হতে হবে।
গতকাল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের শেষ দিনে অধিবেশনের প্রথম দফা সকালে এবং দ্বিতীয় দফা সম্মেলনের সমাপ্তির সময়ও একই নির্দেশনা দেন তিনি।
গত শনিবার কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের তিনি গ্রাম-মহল্লায় দরিদ্র, হতদরিদ্র ও প্রতিবন্ধী মানুষের তালিকা তৈরি করে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করার কথা বলেন। সে বক্তব্যেও প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। গতকাল সকালে জেলা নেতাদের বক্তব্য শুরুর আগেই শেখ হাসিনা বলেন, নতুন কমিটির কাজ হবে দেশের উন্নয়নের ধারাকে ধরে রাখতে এখন থেকেই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য কাজ করা। দলের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশনের কাজ শুরু করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। জনগণের কাছে যেতে হবে। তৃতীয় দফা নির্বাচনে জয়লাভ করতে হলে জনগণের দোরগোড়ায় যেতে হবে। উন্নয়নের কথা বলতে হবে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, গত সাত বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশে উন্নয়নের চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরুন। ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে। জনগণকে বোঝাতে হবে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে।
শেখ হাসিনা এ সময় বিগত সময়ে সরকারে থাকা বিএনপির কর্মকা-ের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন নেতাকর্মীদের। তিনি বলেন, যারা মানি লন্ডারিং করে, পুড়িয়ে মানুষ মারে, যুদ্ধাপরাধীদের মদত দেয়, তারা যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে। ওই লুটেরা দুর্নীতিবাজ, এতিমের টাকা যারা খায়, মানিলন্ডারিং করে, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, তারা ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে না। তারা জনগণের সম্পদ লুটে খাবে। এটাই মানুষকে বোঝাতে হবে।
জনগণকে বলতে হবে, বিএনপি এবং তাদের দোসররা যদি আবার ক্ষমতায় আসে, ধরে নিতে হবে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় আসবে, খুনিরা ক্ষমতায় আসবে। এরা ক্ষমতায় এলে আবার খুনিদের রাজত্ব, দুর্নীতিবাজদের রাজত্ব হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, সরকারের উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে হলে অবশ্যই আওয়ামী লীগকে আরও একবার ক্ষমতায় আসতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণ তার সুফল পাবে।
বিকালে নতুন কমিটি গঠনের আগে এর আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ আমার পরিবার। আওয়ামী লীগ আমার আপনজন। আমার সন্তানদের এত সময় দেই নাই আওয়ামী লীগকে যত সময় দিয়েছি। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সততা দেখতে চাই। আমি চাই, আমি বেঁচে থাকতে থাকতে নেতা নির্বাচন করে দলকে শক্তিশালী করে যাব। তিনি বলেন, আমাকে এবার অবসর দিলে আমি খুশি হতাম। এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত কাউন্সিলররা দাঁড়িয়ে সমস্বরে বলে ওঠেন ‘না’ ‘না’।
নেতাকর্মীদের সম্পদের পিছনে না ছুটে জনগণকে ভালবাসার পাশাপাশি তাদের কল্যাণের জন্য সত্যিকারের আদর্শের কর্মী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা যখন বক্তব্য রাখছিলেন তখন সম্মেলন স্থল মুহুর্মুহু তালিতে ভরে উঠছিল। একপর্যায়ে তিনি বলেন, এখানে বসে তালি বাজালে হবে না। আমাদের অর্জনগুলো জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। জনগণকে বারবার বলতে হবে। আমরা এ কাজ আপনাদের জন্য করেছি। আওয়ামী লীগ করেছে। সম্পাদনা: মাহমুদুল আলম