আওয়ামী লীগের সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক : রিজভী
শাহানুজ্জামান টিটু : আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বিএনপির না যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলের নেওয়া এ সিদ্ধান্তকে সঠিক দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপি যোগদান না করে লাভবান হয়েছে। কারণ জনগণ মনে করে বিএনপি তাদের সমর্থন নিয়েই গণতান্ত্রিক রাজনীতি করে।
গত ১৯ অক্টোবর কারামুক্তির পর রিজভী গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন। ৬৬ দিন পর কার্যালয়ে এলে তার অনুসারীরা তাকে স্বাগত জানান।
কেন তার দল আওয়ামী লীগের সম্মেলনে গেল নাÑ এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন রিজভী। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, দেশে যদি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকতো এবং বিএনপির কাউন্সিলে যদি তারা (আওয়ামী লীগ) অংশ নিতো তাহলে শত উৎপীড়ন ও নির্যাতনের পরও বিএনপি শাসকদলের সম্মেলনে অংশ নিতো।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যেভাবে প্রতিনিয়ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অশ্লীল কথাবার্তা বলা হয়, বিএনপির কাউন্সিলে যেভাবে পদে পদে বাধা দেওয়া হয়েছে, এখনো দলের নেতাকর্মীদের ওপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন চলছে, সেই পরিবেশে একজন ভদ্রলোক যদি তার মেরুদ- থেকে থাকে তাহলে কী করে সে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দেয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ যারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত তারা অবৈধভাবে ক্ষমতা আকড়ে ধরে রেখেছে। তারা জনগণের প্রতিনিধি নয়, নিজেদের জমিদার বলে মনে করে। আর তাই রাষ্ট্রের অর্থায়নে দলের সম্মেলন করছে।
বিএনপির ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে চলতি বছরের ১৯ মার্চ। দলটির কাউন্সিল উপলক্ষে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ১৬ মার্চ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু ১৯ মার্চ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিএনপির কাউন্সিলের আমন্ত্রণ পাননি বলে জানান। পরে ২০ মার্চ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির কাউন্সিলের আমন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অসত্য কথা বলেছেন। রিজভী বলেন, তিনি (সৈয়দ আশরাফ) দেশের একজন সুপরিচিত রাজনৈতিক নেতা। আমাদের যে প্রতিনিধিদল গিয়েছিলেন, তারা নিজে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে সভাপতি শেখ হাসিনার কার্ড দিয়েছেন এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কার্ড সেখানে দিয়েছেন। কিন্তু তার মতো দেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এ ধরনের কথা বলবেন, এটা সত্যি দুঃখজনক।
বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে ওই সময় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, সারাদেশ থেকে যারা ওখানে (বিএনপির কাউন্সিলে) সমবেত হয়েছেন, তারা যেন নিজেদের একটা প্রশ্ন করেন, তা হলোÑ কী পাবেন এ নেতৃত্বের কাছ থেকে। বিকৃত-উন্মাদ রাজনীতির ধারক একজন দেশে বসে, অন্যজন বিদেশে বসে আছেন। তাদের সম্মিলিত শক্তি দ্বারা বাংলার মানুষের কী হবে? তারা দেশকে কী দেবেন?
অপর দিকে এ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, জ্বালাও-পোড়াও-নাশকতার সঙ্গে জড়িত এমন একটি সংগঠনের সম্মেলনে আওয়ামী লীগ যেতে পারে না। ইতোমধ্যে তাদের দুটি শীর্ষ পদেই মামলার আসামি নির্বাচিত হয়েছেন। এখন সম্মেলনের নামে তামাশা হবে। এ তামাশা দেখার জন্য আমাদের প্রতিনিধিদের যাওয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন