প্রথমবারের মতো ছাত্রলীগ থেকে সাধারণ সম্পাদক
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়েই শুরু আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। কলেজজীবন থেকে রাজনীতি শুরু করে ওবায়দুল কাদের ৬০-এর দশক থেকে এ পর্যন্ত সবকটি আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন।
জানা গেছে, ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ওবায়দুল কাদের একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি মুজিব বাহিনীর কোম্পানীগঞ্জ থানার কমান্ডার ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর ওবায়দুল কাদের কারাবরণ করেন। সেই সময় আড়াই বছর তিনি কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। পরপর দুবার এ পদে ছিলেন।
১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতিম-লীর সদস্য ছিলেন। এখন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সংস্কৃতি ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ পদে ছিলেন তিনি। এ পদে থাকার সময়ই এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ মার্চ গ্রেফতার হন। ১৭ মাস ২৬ দিন কারাগারে ছিলেন তিনি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভায় ভয়াবহ গ্রেনেডহামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-৫ আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১২ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো যোগাযোগমন্ত্রী হন তিনি।
১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ওবায়দুল কাদেরের বাবার নাম মোশাররফ হোসেন। তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী ছিলেন। সরকারি চাকরি ছেড়ে কাদেরের বাবা শিক্ষকতার পেশায় যোগ দেন। ওবায়দুল কাদেরের মায়ের নাম ফজিলাতুন্নেসা।
বসুরহাট সরকারি এএইচসি হাইস্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি মেধাতালিকায় স্থান পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। কাদেরের স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা আইনজীবী।
ওবায়দুল কাদের সাংবাদিক ছিলেন। তিনি দৈনিক বাংলার বাণীর সহকারী সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘ সময়। তিনি এ পর্যন্ত নয়টি বই লিখেছেন। সম্পাদনা : আলাউদ্দিন