ভারতের সমাজবাদী পার্টির গৃহযুদ্ধ অব্যাহত মুলায়মের সামনেই ধাক্কাধাক্কি
এম রবিউল্লাহ: উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের আগে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে গৃহযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। লখনউতে সমাজবাদী পার্টির দফতরে হাত মেলানোর পরেও শিবপাল-অখিলেশ দ্বন্দ্ব অব্যাহত রয়েছে। বৈঠকে অখিলেশ মিথ্যা কথা বলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিবপাল। এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এবিপি নিউজ
মুলায়ম সিং যাদবের উপস্থিতিতেই দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এরপরেই দলের বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান অখিলেশ। তার আগে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে মুলায়ম ঘোষণা করেন, সরকার চালাবেন অখিলেশ। শিবপাল থাকবেন দলের দায়িত্বে। বৈঠকে হাতও মেলান কাকা-ভাইপো। এরপরই শিবপালের মন্তব্য নতুন করে অশান্তি শুরু যাদব পরিবারে।
মতার উত্তরাধিকার নিয়ে উথাল-পাথাল মুলায়ম সিংহ যাদবের পরিবার। সমাজবাদী পার্টির অন্তর্কলহে সোমবার উত্তাল হয়ে ওঠে লখনউ। দল বিভাজন হয়ে যেতে পারে , এমন জল্পনার মধ্যে সমাজবাদী পার্টির সদর দফতরের সামনে মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সমর্থকরা বৈঠকের আগে বিােভ দেখায়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে বিােভকারীরা।
ছেলে অখিলেশ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে সকালে দলীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠকে ডেকেছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। বিােভের কারণে পিছিয়ে যায় বৈঠক। বৈঠকে যোগ দিতে দলীয় কার্যালয়ে আসেন অখিলেশ। বৈঠকে অভিমানী অখিলেশ বলেন, মুলায়ম সিংহ যাদব আমার বাবা, আমার গুরু। এতদিন তিনি যা বলেছেন, তাই মেনে এসেছি। একবার বললেই পদত্যাগ দিয়ে দিতাম। এভাবে ভাবমূর্তি নষ্ট করার কী দরকার ছিল।
পাল্টা অখিলেশকে শিবপাল যাদব বলেন, দলের জন্য আমিও অনেক করেছি। গ্রামে গ্রামে সাইকেল নিয়ে প্রচার করেছি। তাহলে আমার দফতর কেন কেড়ে নেওয়া হল?
অখিলেশ ও শিবপাল একে অপরের বিরুদ্ধে দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও এনেছেন। যদিও নতুন দল গঠনের বিষয় বাতিল করে দিয়েছেন অখিলেশ।
সূত্র জানায়, মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে আপত্তি নেই অখিলেশের। তবে শর্ত হিসেবে অমর সিংহকে সরানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি। অমরকে দল থেকে বহিষ্কারের সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন মুলায়ম। এই অবস্থায় অখিলেশের পরবর্তী পদপে কী হয়, সেদিকেই তাকিয়ে আসে রাজনৈতিক মহল।
গত শনিবার ছেলে অখিলেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগী উদয়বীর সিংহকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাবার বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব উত্তরপ্রদেশ মন্ত্রিসভা থেকে প্রত্যাহার করেন তার চাচা শিবপাল সিংহ যাদবকে। শিবপাল দলের উত্তরপ্রদেশ শাখার সভাপতি। মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত হওযার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে প্রত্যাহার করেন স্বজন ভাই রামগোপাল যাদবকে।
টান টান উত্তেজনার মধ্যেই সমাজবাদী পার্টির বৈঠক শুরু হয় লখনউয়ে পার্টির দপ্তরে। বৈঠকে দলের একাধিক নেতা ও মন্ত্রী যোগ দেন। মুলায়ম সিং যাদব পুত্র অখিলেশ যাদব বৈঠক শুরুর আগেই দলীয় দপ্তরে পৌঁছে যান শিবপাল যাদব।
লখনউয়ে দলীয় কার্যালয়ের বাইরে শিবপাল যাদব ও অখিলেশ যাদবের সমর্থকরা একজোট হতে শুরু করে। দু-একটি বিপ্তি সংঘর্ষও হয়। পুরো ঘটনায় দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ নরেশ আগরওয়াল জানান, নির্বাচনের আগে সমাজবাদী পার্টির ভেতরে যা হচ্ছে তার জন্য দলকে চড়া মূল্য দিতে হবে। রামগোপাল যাদবকে দল থেকে বহিষ্কার দুর্ভাগ্যজনক। দলের স্বার্থে নেতাজি মুলায়ম সিং যাদব ও মুখ্যমন্ত্রীকে অখিলেশ যাদব মিলেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ