কাশ্মীরে ফের অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন, নিহত ১ ছররায় আহত ১০৬৫, বেশিরভাগই শিক্ষার্থী
ইমরুল শাহেদ : জম্মু-কাশ্মীরে চলমান আন্দোলন দমন করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহার করা ছররা গুলিতে আহতদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ১০৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে গ্রেটার কাশ্মীর অনলাইন। এছাড়া উরি সেনা ছাউনিতে হামলার ঘটনা ঘটার পর প্রায় প্রতিদিনই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কাশ্মীরে দুবার অস্ত্রবিরতি চুক্তি লংঘন করে গোলাগুলি হয়েছে আর এস পুরা, পারগোয়াল, কানাচক ও আখনুর সেক্টরসহ উপত্যকায় বিএসএফের ১৩টি ছাউনিতে। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনারাও। গুলি বিনিময় চলাকালীন আর এস পুরা সেক্টরে জখম হন ২ জন বিএসএফ সদস্য। চিকিৎসার জন্য জম্মুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। সেখানে মৃত্যু হয় একজনের- সুশীল কুমারের। কানাচকে মৃত্যু হয়েছে একটি ৮ বছরের শিশুর। গোলাগুলিতে জখম হয়েছেন ২ এলাকাবাসী। ভারতের অভিযোগ, শুক্রবার রাতেই হীরানগর সেক্টরে অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে পাকিস্তান রেঞ্জার্সরা। তাতে জখম হয়েছিলেন গুরনাম সিং নামের এক বিএসএফ সদস্য। শনিবার রাতে মৃত্যু হয় তার। রোববার সকাল থেকে আবারও সীমান্ত লাগোয়া সেনা ছাউনি ল্য করে গোলা গুলি ছুঁড়তে শুরু করে পাকিস্তান বাহিনী। সীমান্ত বাহিনীর কর্মকর্তা অরুণ কুমার জানিয়েছেন, ‘গত তিনদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তানি সেনারা। পাল্টা জবাব দিতে তৈরি আমাদের জওয়ানরা।’
অন্যদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ পরিদফতর আইএসপিআর গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতীয় বাহিনী বিনা উস্কানিতে রোববার রাতে গুলিবর্ষণ করলে বেশ কিছু পাকিস্তানি নাগরিকের হতাহতের ঘটনা ঘটে। হতাহতরা সবাই বেসামরিক নিরীহ নাগরিক বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। পাঞ্জাব রেঞ্জার্স ভারতীয়দের পাল্টা জবাব দিয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, হারপাল, পাখলিয়া এবং চারওয়া সেক্টরে গুলি-গোলা বর্ষণ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, রাতভর দু’পরে মধ্যে গুলি বিনিময় অব্যাহত ছিল।
গ্রেটার কাশ্মীরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছররা গুলিতে আহতদের অন্তত ৫০০ জনের বয়স ২০ বছরের নিচে। তাদের বেশিরভাগই স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং তাদের আক্রান্ত চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য এখনো সংগ্রাম করে যাচ্ছে তারা। হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী, ছররায় আহত মোট ১০৬৫ জনকে শ্রীনগরের শ্রী মহারাজা হরি সিং হাসপাতালে এবং শের-ই-কাশ্মীর মেডিকেল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫২৩ জনই ২০ বছরের নিচে। এছাড়াও, ১০১ জনের বয়স ১৫ বছরের নিচে এবং ছররায় আহত সবচেয়ে ছোট শিশুটির বয়স ৪ বছর।