শীতাতপ যন্ত্রের কারণেই উষ্ণ হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুম-ল
আরিফ: সাধারণ ফ্রিজ এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে এইচএফসি বা হাইড্রোফোরোকার্বন নামে যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় তা পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ণ বন্ধ করার জন্য একটি বৈশ্বিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
প্রায় ২শটি দেশ এ ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছে। রোয়ান্ডার রাজধানী কিগালিতে গত সপ্তাহে এ চুক্তিটি সই হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এইচএফসি একটি গ্রিনহাউজ গ্যাস হিসেবে কার্বন ডাইঅক্সাইডের চাইতে কয়েক হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী এবং এটার উচ্ছেদ বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি কমাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
ওজন স্তরকে তির হাত থেকে রা করার জন্যে এ এইচএফসির ব্যবহার শুরু হয়েছিল। কিন্তু এর খারাপ দিকটি হলো বায়ুম-লের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্যে কার্বন ডাই অক্সাইডের তুলনায় এই হাইড্রোফোরোকার্বনই অনেক বেশি দায়ী।
এন্টার্কটিকার উপরে ওজন স্তরে বড় রকমের গর্ত তৈরি হয়ে যাচ্ছে এ আশঙ্কায় ১৯৮৭ সালে মন্ট্রিয়াল চুক্তি স্বারিত হয়েছিল। ওই চুক্তির অন্যতম প্রধান একটি ল্য ছিল ওজন স্তর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্যে দায়ী সব ধরনের কোরোফোরোকার্বন বা সিএফসিকে নির্মূল করা।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ হাইড্রোফোরোকার্বনের বড় ধরনের একটি সাইড এফেক্ট আছে। এ এইচএফসি বায়ুম-লের তাপমাত্রা কার্বন ডাই অক্সাইডের তুলনায় কয়েক হাজার গুণ বেশি পরিমাণে ধরে রাখতে পারে।
ওজন স্তরকে অত রাখতে এ হাইড্রোফোরোকার্ন সহায়তা করলেও এ রাসায়নিক উপাদান বায়ুম-লের তাপমাত্রা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এয়ার কন্ডিশনারের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার এয়ার কন্ডিশনারের ব্যবহার বাড়াতে বাড়ছে হাইড্রোফোরোকার্বনের ব্যবহারও। এটা একটা চক্রের মতো।
এক হিসেবে দেখা গেছে, প্রতিবছর এ এইচএফসির চাহিদা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে।
কিগালিতে স্বারিত এ চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর সবচেয়ে সম্পদশালী দেশগুলো আগামী তিন বছরের মধ্যে এইচএফসির ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা শুরু করবে। তবে অপোকৃত কম উন্নত দেশগুলোকে ১৬ বছর পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে।
বিজ্ঞানীদের মতে, এর ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করা সম্ভব হলে ২০৫০ সাল নাগাদ বায়ুম-ল থেকে ৭০০০ কোটি টন কার্বন ডাই অক্সাইডের সমপরিমাণ গ্রিনহাউজ গ্যাস অপসারণ করা যাবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা। সম্পদনায়: হামিদুর রহমান