ফেসবুকে বাংলাদেশ…
আর কত লেজেগোবরে করবে?
আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ
সিলেট মদনমোহন কলেজে সুন্দরবন নিয়ে একটি তথ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল ছাত্রফ্রন্ট। সরকারের মহাবীর ছাত্রলীগ সহ্য করতে পারেনি, বীরত্ব দেখিয়ে ভেঙে দিয়েছে সব আয়োজন। সরকারের ভয়Ñ আলোচনায়, বিতর্কে, সাইকেলে, আলোকচিত্রে, কথায়, গানে, নাটকে…। কত জায়গায় ভাঙবে তারা? কতজনকে দমাবে তারা? মানুষকে ভয় দেখাতে গিয়ে নিজেদের পরাজিত চেহারাই যে প্রকাশিত হচ্ছে তা বোঝানোর জন্যও যদি স্তাবক লোকজন একটু সাহস করত! একদিকে হামলা, হুমকি, মারপিট, টিয়ারগ্যাস, জলকামান। অন্যদিকে জনগণের অর্থ খরচ করে বিজ্ঞাপনের তোতাপাখি ভাড়া করা, আবার ইউনেস্কোকে বোঝানোর কথা বলে দলেবলে প্যারিস বেড়ানোর আয়োজন! সুন্দরবনবিনাশী প্রকল্প নিয়ে সরকার নিজেকে আর কত লেজেগোবরে করবে?
এর শেষ কোথায়?
ডা. ইমরান এইচ সরকার, মুখপাত্র, গণজাগরণ মঞ্চ
একের পর এক খুন, ধর্ষণ চলছেই! এর শেষ কোথায়? এবার গাজীপুরে নৃশংসতার বলি হলো অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মুন্নি। বখাটের প্রস্তাবে সায় না দেওয়ায় জীবন দিতে হলো তাকে। এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঘাতক আরাফাত গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর বেপারীপাড়া এলাকার আতাউর সরকারের ছেলে। সে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে প্রায় ১ বছর ধরে বিভিন্ন সময় মুন্নিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে রাজি না হওয়ায় কিছুদিন ধরে রাস্তায় তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাত। মুন্নি বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানায়। পরে মুন্নির মা-বাবা আরাফাতের পরিবারকে এ ব্যাপারে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা বরং আরাফাত উল্টো তাদের হুমকি দেয়।
আরাফাতের যন্ত্রণায় মুন্নির স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে স্থানীয়রা জানান, কিন্তু ১ নভেম্বর পরীক্ষা থাকায় সে কদিন ধরে স্কুলে যাচ্ছিল। এ সময় সে মুন্নিকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল।
মঙ্গলবার ভোরে আরাফাতকে মুন্নিদের বাড়ি কাছে দেখতে পান মুন্নির মা। এত সকালে সে এখানে কি করছে এমন জিজ্ঞাসা করতেই আরাফাত দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে মুন্নির ঘরে গিয়ে খাটের উপর গলায় ওড়না দিয়ে প্যাচানো অবস্থায় মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। মুন্নির মা অভিযোগ করেন, আরাফাতের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে মুন্নিকে হত্যা করেছে সে। ঘাতক আরাফাত বর্তমানে পলাতক রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই খুনিকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যেন আর একজন মুন্নিও অকালে ঝরে না যায়।
দয়া করে আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করবেন না
শেখ আদনান ফাহাদ, সহকারী অধ্যাপক, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্ট্যাডিজ বিভাগ, জাবি
আওয়াম-ই-লীগ মানে হলোÑ সাধারণ মানুষের দল। আওয়াম মানে সাধারণ মানুষ। লীগ মানে দল, সমাবেশ ইত্যাদি। কিন্তু এ দলের একাংশের আচরণ দেখলে মনে হয়, এটা সাধারণ মানুষের দল নয়, অথচ এই সাধারণ মানুষের ভোটেই কিন্তু আওয়ামী লীগ বারবার ক্ষমতায় এসেছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু জীবনে যা করেছেন তার পুরোটাই কিন্তু আওয়ামের জন্য। জাতির জনকের দলের বর্তমান নেতৃবৃন্দের একাংশ যা করেন, তার সঙ্গে ইতিহাস মেলে না। কাল যখন এই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভিড়ে, গাড়ির বহরে ঢাকা শহরে, বিশেষ করে গাবতলী থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত ভয়ানক যানজট সৃষ্টি হয়েছিল, তখন মানুষের কষ্ট দেখে মনে হয়েছে, নতুন সাধারণ সম্পাদক কি একবারও ভাবেননি আমাদের কথা? যোগাযোগমন্ত্রী মহোদয় কি একবারও ভেবে দেখেননি, কাল যখন ফুল আর মিষ্টির বন্যায় পার্টি অফিস ভেসে যাচ্ছিল, তখন লোকাল বাসে কী পরিমাণ গরম আর ঘামের মধ্যে মানুষ (?) ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো কোনো অ্যাম্বুলেন্স আটকে ছিল, যেখানে কোনো সন্তান তার বাবা-মায়ের মৃত্যু ভয়ে পরম করুণাময়কে ডাকছে।
আওয়ামী লীগ তো শুধু এই নেতা-কর্মীদের দল না, এদের সংখ্যা আর কত? দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই তো চলতে হবে। আপনারা ক্ষমতায় না থাকলে হয়তো আপনাদের কিছু হবে না। আমাদের অনেক কিছু হবে। আপনাদের টাকা আছে, এদিক সেদিক চলে যাবেন। আমাদের তো এদেশেই থাকতে হবে, এই পৃথিবীতে আমাদের একটাই দেশ, বাংলাদেশ। দয়া করে আওয়ামী লীগকে আপনারা জনবিচ্ছিন্ন করবেন না, আওয়ামী লীগ শুধু আপনাদের না, আমাদেরও।
বাঙালি সংস্কৃতিতে তাদের খুব ভয়
স্বকৃত নোমান, কথাসাহিত্যিক
কদমবুচি অনার্য সংস্কৃতিজাত। পরবর্তীকালে আর্যরাও একে স্বীকার করে নিয়েছে। একমাত্র ভারতীয় উপমহাদেশেই এ সংস্কৃতি প্রচলিত। বাঙালি সংস্কৃতিতে এর প্রচলন বহুল। পৃথিবীর অন্যকোনো জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এর প্রচলন আছে কিনা নিশ্চিত নই। থাকার কথা নয়। ইসলামি কট্টরপন্থিরা কদমবুচির ঘোরবিরোধী। কাউকে কদমবুচি করতে দেখলে তাদের মাথায় রক্ত উঠে যায়। কতল করার ইচ্ছা জাগে। তাদের যুক্তি, এর মধ্য দিয়ে মানুষের কাছে মাথা নোয়ানো হয়। মানুষের কাছে মাথা নোয়ানো হারাম।
খেয়াল রাখা দরকার, পা ছুঁয়ে প্রণাম বা সালাম বা কদমবুচি মানে আনুগত্য প্রকাশ নয়, শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ। কদমবুচির সঙ্গে আনুগত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। কদমবুচির সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। হারাম-হালালের সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক সংস্কৃতির সঙ্গে। সংস্কৃতির সঙ্গে বলেই কট্টরপন্থিরা এই সংস্কৃতি রদ করে দিতে চায়। বাঙালি সংস্কৃতিতে তাদের খুব ভয়। কিন্তু সফল হবে না।
বাঙালি তার সংস্কৃতিকে এত সহজে বর্জন করবে না। বাঙালি সংস্কৃতি যতদিন থাকবে, ততদিন কদমবুচিও থাকবে। এর মধ্যে দোষের কিছু নেই। এটি দোষণীয় সংস্কৃতি নয়। এর মধ্য দিয়ে বরং সামাজিক বন্ধন সুগঠিত হয়।