মুফতি হাশমতুল্লাহ
‘বল, তিনি আল্লাহ এক। আল্লাহ মুখাপেক্ষীহীন। তিনি (কাউকে) জন্ম দেননি এবং তিনি জন্ম নেননি। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।’ এটি পবিত্র কুরআনের সুরা ইখলাসের ভাষ্য। সুরাটিতে আল্লাহর একাত্মবাদের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর সমতুল্য কেউ নেই বলেও ঘোষণা করা হয়।
তাওহিদের বিপরীত শিরক। শিরক যে করে তাকে মুশরিক বলে। মুশরিকের ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন বলেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ একমাত্র শিরকের গুনাহ মাফ করবেন না। এ ছাড়া আর যত গুনাহ আছে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মাফ করবেন। যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরিক করল সে তো বড় মিথ্যা রচনা করল এবং বড় কঠিন গুনাহের কাজ করল।’ (সুরা নিসা : ৪৮)।
শুধু আল্লাহর সঙ্গে কাউকে সমতুল্য করার নামই শিরক নয়, লোক দেখানো ইবাদতও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। যেমন, নামাজের ভেতরে বাইরে কতগুলো ফরজ কাজ আছে যাকে নামাজের আহকাম আরকান বলে। সে আহকামের একটা হলো শরীর পাক হওয়া। আর শরীর পাক বলতে বুঝায় দুই ধরনের পাক, এক. বাহ্যিক পাক, যেটা সাধারণত অজু গোসল দ্বারা অর্জন করা হয়। দুই. অভ্যন্তরীণ পাক, এটা হলো হৃদয়, মনের পবিত্রতা। এর অর্থ হলো, মনকে সব রকমের শিরকি বিশ্বাস থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
একটু উপলব্ধি করলেই বুঝা যায় শিরক কত ভয়ঙ্কর? বেখেয়ালি মন, সচেতন চিন্তা, চেতনা, বিশ্বাসের অভাব, কখনো কখনো উপলব্ধিহীন কথা ও কাজ ঈমানদারদের কষ্টের নামাজ জাতীয় ইবাদত পর্যন্ত বরবাদ করে দিতে পারে শিরক। কারণ সে চিন্তা, বিশ্বাস, কথা ও কাজে শিরকযুক্ত থাকে। কাজেই সাবধান! আমাদের চিন্তা, বিশ্বাসে, কাজে ও কর্মে যেন সামান্যতম শিরকেরও স্থান না থাকে। তাই ধর্মীয় প্রতিটি বিধান পালনের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা প্রয়োজন। সকল গুনাহের সবচেয়ে বড় গুনাহ শিরক। শিরক থেকে বেঁচে থাকলে ঈমান বেঁচে থাকবে। আর শিরকে নিমজ্জিত হলে ঈমান ধ্বংস হবে। আর ঈমান ধ্বংস হয়ে গেলে আখেরাত বরবাদ হয়ে যাবে। তাই প্রতিটি ঈমানদারের উচিত শিরকমুক্ত জীবন যাপনে সতর্ক থাকা। লেখক : শিক্ষক