মাসুদ আলম : দিনাজপুরের পার্বতীপুরে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি সাইফুল ইসলামকে সাত দিনের রিমান্ডে নিলেও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেনি পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে যুবদলের এই নেতার বিরুদ্ধে। এলাকায় কালা সাইফুল নামে পরিচিত তিনি। চলতি বছরে এক মাসেরও বেশি নারী নির্যাতন মামলায় জেল খেটেছে সাইফুল।
জেলা পুলিশের সদর সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার(এএসপি) হাসানুজ্জামান মোল্লা বলেন, বাছাইকৃত পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি (সেল) গঠন করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। তাই ওই আসামিকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়নি।
ধর্ষণের ঘটনায় আলামত হিসেবে উদ্ধারকৃত শিশুটির কাপড়-চোপর পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পার্বতীপুর থানার এসআই স্বপন কুমার চৌধুরী। জানা গেছে, পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের জমিরহাট এলাকার তকেয়াপাড়া গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি। ২০ বছর আগে সে একই গ্রামের সহির উদ্দিনের মেয়ে নার্গিসকে বিয়ে করেন। বিবাহিত জীবনে তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে জন্ম নেয়। বিয়ের আগে ও পরে সে কাঠ ব্যবসাসহ দালালি ব্যবসা করে সংসার পরিচালনা করত।
ধীরে ধীরে সে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকে। কারণে-অকারণে লোকজনের ওপর হাত তোলা এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করায় লোকজন ক্রমশ তাকে ভয় পেতে শুরু করে। প্রায়ই সে তার স্ত্রী নার্গিসকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। এরই মধ্যে তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন বড় মেয়ের শাশুড়ির সঙ্গে- এমন অভিযোগও রয়েছে। এসব কারণে গত বছর স্ত্রীর সঙ্গে তার ডির্ভোস হয়ে যায়। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নারী নির্যাতন মামলায় ১ মাস ৯ দিন হাজতে ছিলেন তিনি। হাজত থেকে বেরিয়ে প্রকাশ্যেই জড়িয়ে পড়ে ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসার সঙ্গে। চলতি বছরের মার্চে সাইফুল তার বড় মেয়ের শাশুড়িকে বিয়ে করে।
সাইফুল ইসলামের ভাই সাইদুল ইসলাম জানান, এক বছর ধরে সাইফুলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই। মাদকাসক্ত হওয়ায় প্রায়ই তাদের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। সাইফুল ইসলামের সঙ্গে অচেনা কিছু লোকজনের ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠে। প্রায়ই তারা সাইফুলের বাড়িতে যাওয়া-আসা করতো। এই কারণে সাইফুল ক্রমে বেপরোয়া হয়ে উঠতে থাকে।
ধর্ষিতা শিশুর খালা বুলবুলী রানী জানান, শিশুটি নিখোঁজের পর সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করলে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বাড়িতে এসে তাকে (শিশুটিকে) দেবী বা জ্বিনে লুকিয়ে রেখেছে বলে অপপ্রচার শুরু করে। পরে তিনি কবিরাজ নিয়ে আসেন ও কবিরাজ বলে পরের দিন সকালে ওই শিশুকে পাওয়া যাবে। সম্পাদনা : রিকু আমির