আজাদ হোসেন সুমন: গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত রাইফেল ভারতে তৈরি এবং এগুলো গুলশান হামলার একমাস আগে জঙ্গিদের কাছে আসে বলে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইয়ের ধারণা। গতকাল শনিবার টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সূত্রমতে, পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় অস্ত্র তৈরি করা হয়। পশ্চিবঙ্গের বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গত সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার ছয় জঙ্গির একজন এমনটাই জানিয়েছেন।
এনআইএ-এর কাছে ওই জঙ্গি বলেছেন, মালদার আস্তানায় পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় অস্ত্র বানানো হয়। বিহারের মুঙ্গের থেকে আসা অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের প্রশিক্ষণ দিতে গোপনে মালদা আসেন পাকিস্তানি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অস্ত্র প্রস্তুতকারকরা। একে-২২ রাইফেল তৈরির জন্য সীমান্তবর্তী জেলায় ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। সেখানে তৈরি করা অস্ত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হয়। মালদায় অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া পাকিস্তানিরা দারা আদম খেল সম্প্রদায়ের সদস্য বলে ধারণা করছে এনআইএ। পাকিস্তানের পেশোয়ার ও কোহাটের মধ্যবর্তী একটি গ্রামে এই সম্প্রদায়ের বাস। আধুনিক অস্ত্র নকল করতে এই সম্প্রদায়ের লোকজন তালেবানকে নিয়মিতভাবে সহায়তা করে বলে ধারণা করা হয়। এনআইএ-এর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এ ব্যাপারে তারা এখনো নিশ্চিত নন। তবে অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষকদের যে ভাষার কথা জিজ্ঞাসাবাদে এসেছে, তা পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ ও আশপাশের ভাষা। আর গ্রামটি সেখানেই অবস্থিত। গুলশান হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ভারতের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে আসে বলে সম্প্রতি জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
গত ১ জুলাই জঙ্গিরা হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে। তাৎক্ষণিক অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন পুলিশের দুজন কর্মকর্তা। ২ জুলাই সকালে সেনা কমান্ডোরা অভিযান চালিয়ে হলি আর্টিজান থেকে ১৩ জনকে উদ্ধার করেন। কমান্ডো অভিযানে হামলায় জড়িত পাঁচ জঙ্গি নিহত হন। পুলিশ বলছে, এই হামলায় ‘নব্য জেএমবি’ জড়িত।
প্রসঙ্গত খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশের জেএমবি সদস্য নাঈম আহমেদসহ ৪ জঙ্গি ধরা পড়ে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রেফতার জঙ্গিদের ফেরত চেয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। জবাবে বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানান ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম