মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক এগারো দিন আগে রাষ্ট্রীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ‘এফবিআই’ কর্তৃক হিলারির ই-মেইল পুনর্তদন্তের খবরে স্বস্তি-অস্বস্তি দানা বেঁধেছে। স্বস্তি রিপাবলিকান দলীয় ট্রাম্প পক্ষের এবং অস্বস্তি ডেমোক্রেট দলীয় হিলারি পক্ষের। রিপাবলিকানদের স্বস্তি এ কারণে যে, ট্রাম্পের সেটাই ‘এক নম্বর’ দাবি ছিল। আর তাই হিলারিকে ‘জেলে’ পাঠানোর মতো বাগাড়ম্বর করে এখন ট্রাম্প বলছেন- বিচার বিভাগের ‘মিসক্যারেজ’ সংশোধন হতে যাচ্ছে।
সাধারণ মাত্রই বোঝেন জেলে পাঠানোর জন্য চাই চার্জশিট, সাক্ষি-প্রমাণের শুনানি, এরপর বিচারের রায়ে জেলে পাঠানোর যথোপযুক্ত রায়। তাই যে তদন্তে চার্জশিটই জমা দেয়া হয়নি, সেখানে রায়বিহীন বিষয়কে ‘মিসক্যারেজ’ বলা কতটা অর্থপূর্ণ বা যুক্তিযুক্ত? এ যেন ‘ন্যায়বিচার’-এর প্রক্রিয়াকে রীতিমতো বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো। আসলে ট্রাম্প বাকপটু হলেও রাজনীতিবিদ হতে গিয়ে বাচালে পরিণত হয়েছেন। কিন্তু রাজনীতিবিদদের ‘বাচাল’ হতে নেই। তাই উৎসবে মেতেছে ট্রাম্প পক্ষ।
আর হিলারি পক্ষে অস্বস্তি জেগেছে, কারণ নির্বাচনের সময় রয়েছে মাত্র এগারো দিন। এর মাঝে এমন দুসংবাদটা স্বভাবতই অস্বস্তির। তবে হিলারি আগে রাষ্ট্রীয় ই-মেইলের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ই-মেইল সার্ভার ব্যবহারে ‘দুঃখ’ প্রকাশ করলেও এখন এফবিআইয়ের এ পুনর্তদন্তের ক্ষেত্রে অনেক বেশি ‘কনফিডেন্ট’ বা আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব নিয়ে তা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। এ দাবি তোলার কারণ, যেহেতু এফবিআই পরিচালক জেমস কোমে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসকে এ পুনর্তদন্তের বিষয়ে তিন প্যারার এক চিঠিতে সাবেক কংগ্রেস প্রতিনিধি অ্যান্থনি ওয়েনারের ‘অপরিণতকে যৌন সম্পর্কিত ই-মেইল করার’ তদন্ত করতে গিয়ে কিছু নতুন ই-মেইল পাওয়া গেছে বলে অবহিত করেছেন, যা হিলারি ক্লিনটনের প্রাইভেট ই-মেইল সার্ভার সংশ্লিষ্ট হতে পারে। খেয়াল করুন, ‘ই-মেইল সার্ভারসংশ্লিষ্ট হতে পারে’। অর্থাৎ ‘মে বি পার্টিন্যান্ট টু দ্য হিলারি ক্লিনটন প্রাইভেট ই-মেইল সার্ভার’। এখন সেটাই
রিপাবলিকান-ডেমোক্রেট পক্ষে-বিপক্ষে স্বস্তি-অস্বস্তির উদ্রেক করেছে। বাস্তবে ‘উত্তরের পরিবর্তে বেশুমার প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে’।
সেক্ষেত্রে প্রশ্ন জন্মেছে- তদন্তের দাবি জানিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে হিলারির ই-মেইল পুনর্তদন্তে স্বস্তিতে ‘বাচাল’ হয়ে বিচার বিভাগের ‘মিসক্যারেজ’ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাচ্ছেন, শেষটায় তার নারীঘটিত অনাচারগুলোই না আবার ‘ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশনে’ রূপ নেয়। এমনিতেই সর্বশেষ সাবেক মিস ফিনল্যান্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিতম্ব স্পর্শের অভিযোগ তুলেছেন। তার আগে আরও এগারোজন যুক্তরাষ্ট্রে অনুরূপ অভিযোগ এনেছেন।
ই-মেইল: [email protected]