ইসমাঈল হুসাইন ইমু ও মাসুদ আলম: থানায় সহকারী পুলিশ সুপার নিয়োগ নিয়ে ইন্সপেক্টরদের (ওসি) মধ্যে যে হতাশা দেখা দিয়েছিল তা শিগগিরই শেষ হচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন-এর নেতারা এএসপি নিয়োগ বন্ধের দাবির বিষয়ে আইজিপিকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও যাবেন বলে জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় পুলিশ সদর দফতরে পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের ৯ কর্মকর্তা আইজিপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তারা একটি লিখিত দাবি দাওয়াও পেশ করেন আইজিপির কাছে।
অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমাদের মধ্যে যে হতাশা দেখা দিয়েছিল শিগগিরই তা শেষ হচ্ছে। আইজিপি তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
ডিএমপির তেজগাঁও থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, সারাদেশে কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর রযেছে ১ লাখ ৬৭ হাজার। এছাড়া এএসপি রয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে আগুন সন্ত্রাসের মোকাবিলায় মাঠপর্যায়ের পুলিশই ছিল। নিহতদের বেশিরভাগই মাঠপর্যায়ের (কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর) পুলিশ। সে হিসেবে থানার দায়িত্বে এএসপি না দেওয়াই ভালো বলে জানান তিনি।
পুলিশের ইন্সপেক্টর ও সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তা জানান, থানার ওসির দায়িত্ব এএসপিদের দিলে পুলিশ বাহিনীর চাকরির শুরুতে কনস্টেবল থেকে সাব ইন্সপেক্টর পর্যন্ত যেসব সদস্য ইন্সপেক্টর হওয়ার স্বপ্ন দেখে তারা কষ্ট পাবে। ইন্সপেক্টর হলে তারা থানার ওসির দায়িত্ব পাবেন এভাবে নিজেদের তৈরি করেন। স্বপ্ন দেখেন থানার ওসি মানে বড়কর্তা। এ অবস্থায় ওসির দায়িত্ব এএসপিদের দেওয়া হলে মাঠ পুলিশের সব স্বপ্ন ভেঙে যাবে।
ঢাকা রেঞ্জের একজন ইন্সপেক্টর বলেন, ইন্সপেক্টররা মাঠে কাজ করে মামলা ও আইনি প্রক্রিয়া আয়ত্ত করে থানার দায়িত্ব পায়। এক্ষেত্রে এএসপিদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। আর একজন ইন্সপেক্টর মাঠ থেকে উঠে আসায় তারা কনস্টেবল, এএসআই ও এসআইদের মনের কথা বুঝতে পারে। তবে এক্ষেত্রে এএসপিদের সঙ্গে তাদের দূরত্ব রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে থানায় দুজন করে ইন্সপেক্টর নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এদের একজন ওসি (অপারেশন ) অন্যজন ওসি (তদন্ত)। একই বছরের সিদ্ধান্ত হয়, দেশের সব থানায় (ওসি) পদে পরিদর্শকদের বদলে সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) নিয়োগ করা হবে। এ জন্য ঢাকা মহানগরের সব থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে এএসপিদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য মহানগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশও দেওয়া হয়। তবে পুলিশের নীতিনির্ধারণী গ্রুপে এ নিয়ে আলোচনা হলেও বাহিনীর ভেতরে বিষয়টি নিয়ে তখনই নানা প্রশ্ন উঠে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম