আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরানোর বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করবেন আইনমন্ত্রী
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরনো হাইকোর্ট ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় আগ বাড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। তবে মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণভাবে সিদ্ধান্ত রয়েছে ট্রাইব্যুনালকে সরিয়ে নেওয়ার। বিষয়টি প্রধান বিচারপতিকে কিংবা সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকেও জানাতে চাইছে না তারা।
আইন মন্ত্রণালয়কে সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনের তরফ থেকে দখলমুক্ত করার সময়সীমা তিন দিন পার হতে চলছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না জানানোর কারণে আইন মন্ত্রণালয় মনে করছে, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে চিঠি না আসা পর্যন্ত তাদের থাকতে বাধা নেই।
আইন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তারা প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষা করছেন। সেখান থেকে শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত আসে তা দেখতে চাইছেন। এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আইনমন্ত্রী কথাও বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। এ কারণে এখন আর তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন না। চিঠিতেই সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মনে করছেন আইনমন্ত্রী।
সূত্র জানায়, আইন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রীর কাছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ অনেকেই অনুরোধ করেছেন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার যাতে অব্যাহত থাকে। বন্ধ না হয়। এছাড়া বিচার চলাকালে আদালত স্থানান্তর করতে গিয়ে বিচারকাজ যেন কোনো বাধাগ্রস্ত না হয়, কোনো কারণে বিচারকাজ বন্ধ না হয় এবং এই বিচারের যে গুরুত্ব রয়েছে তা যাতে ধরে রাখা হয়। এছাড়াও নিরাপত্তার বিষয়টিও তারা তুলে ধরেছেন। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কথাও তারা তুলে ধরেছেন।
সূত্র জানায়, আইনমন্ত্রী জনগণের মতামতকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি মানুষের সঙ্গেও মতামত নিয়ে দেখেছেন জনগণ চায় না আদালত স্থানান্তর এ সময়ে করা হোক। এ কারণে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালও সরাতে চাইছেন না।
আইনমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, সরকার ও মন্ত্রণালয় চায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরনো হাইকোর্ট ভবনেই রাখা হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, এই ভবন দখলমুক্ত আপাতত করা যাচ্ছে না। কারণ মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরানো হলো জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হবে। দেশের সঠিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতার ক্ষেত্রে ভবন হস্তান্তর প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে।
তাছাড়াও আমাদের সীমাবদ্ধতার কথা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সেই সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়সহ অন্যান্য সবকিছু তুলে ধরে আমরা সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে জানিয়েছি। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও প্রধান বিচারপতি এ ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিবে আইন মন্ত্রণালয় প্রত্যাশা করছে।
আইনমন্ত্রী মনে করছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম এখন বন্ধ করে পুরাতন হাইকোর্ট ভবনের দখল সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে হস্তান্তর করা হলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা সর্বজনগ্রাহ্য হবে না। দেশবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত