মামুন খান ও সাবিহা সুলতানা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ৩ বছরের কারাদ-ের রায় দিয়েছেন আদালত।
গতকাল বুধবার সকালে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এই রায় ঘোষণা করেন। ছয়টি বিবেচ্য বিষয়ের মধ্যে ১টির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে এই দ- প্রদান করেন। রায়ে দ-ের পাশাপাশি তাকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন বদি। রায়ে দ-িত হওয়ার পর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বদির পক্ষের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান লিখন রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
এর আগে বেলা ১০টার কিছু পরে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন বদি। এসময় তাকে বিচলিত মনে হয়নি। তিনি এর আগে সাংবাদিকদের সামনে একাধিকবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের যে অভিযোগ, তা সত্য নয়।
গত ১৯ অক্টোবর আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এদিন ঠিক করেন বিচারক। ১০ আগস্ট দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। গত ২৯ জুন বদি আত্মপক্ষ শুনানি করেন। ওইদিন তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবী করে একটি লিখিত বক্তব্য আদালতে দাখিল করেন। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ১৫ সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বদির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামার বাইরে ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদ গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ছাড়া অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের বৈধতা দেখানোর জন্য কমমূল্যে সম্পদ ক্রয় দেখিয়ে এক কোটি ৯৮ লাখ তিন হাজার ৩৭৫ টাকা বেশি মূল্যে বিক্রি দেখানোর অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো.আবদুস সোবহান রমনা থানায় গত ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট মামলাটি করেন।
এ ঘটনায় গত বছরের ৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মঞ্জিল মোর্শেদ আদালতে বদির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে বদির বিরুদ্ধে ছয় কোটি ৩৩ লাখ ৯৪২ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে বলা হয়েছে, তিনি দুদকের কাছে তিন কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার ২৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। মামলাটিতে তিনি ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর এমপি বদি হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু