পরাগ মাঝি: যুদ্ধ কেবল মানুষ কিংবা জীবনকেই শরণার্থী করে না। যুদ্ধে শরণার্থী হয় শিল্প সংস্কৃতি এমনকি বিশ্ব ঐতিহ্যও। আরব বসন্তের কাল থেকেই পৃথিবীতে মুহুর্মুহু বাড়ছে শরণার্থী সংখ্যা। আগ্রাসনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে নানা জাতির নিজস্ব সংস্কৃতি, কথা-উপকথা আর প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন।
বর্তমান সময়ে ক্রমবর্ধমাণ শরণার্থী সমস্যা সারা পৃথিবীরই আলোচ্য বিষয়। এ সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছে ইউরোপের বেশকিছু দেশ। তবে, শরণার্থী হয়ে যাওয়া প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের আশ্রয় দিতে এগিয়ে এসেছে ফ্রান্সের লুভর মিউজিয়াম। দেশটির প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ ঘোষণা দিয়েছেন ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে যুদ্ধপ্রবণ অঞ্চলগুলোর নিরাপদ আশ্রয় হতে পারে ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চল, যেখানে লুভর মিউজিয়াম অবস্থিত।
সিরিয়া এবং ইরাকের মতো দেশগুলোতে প্রচুর প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে, যেগুলো এখন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মুখে।
প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক এবং শৈল্পিক নিদর্শনসমূহকে বাঁচাবে লুভর মিউজিয়াম।’ এসময় তিনি ৬০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে বানানো মিউজিয়ামের একটি বর্ধিত ভবনের ফলক উন্মোচনকালে তিনি এ বক্তব্য দেন। ভবনটি ২০১৯ সালে উন্মুক্ত করা হবে।
এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে বিশ্ব ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত এক জরুরি বৈঠকে অংশ নেবেন ওঁলাদ। আশা করা হচ্ছে, বৈঠকে আরও ৪০টি দেশের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। ওঁলাদ সেখানে তার প্রস্তাবনা তুলে ধরবেন।
ওঁলাদ বলেন, ‘সন্ত্রাসী এবং বর্বররা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সমূহকে ধ্বংস করে দেওয়ার।’ এ সময় তিনি সিরিয়া এবং ইরাকের প্রসঙ্গটি বিশেষভাবে আলোচনা করেন।
ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, লিবিয়া এবং মালির প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো ধ্বংস করে দেওয়ার। শুধু তাই নয়, অনেক নিদর্শন তারা লুট করে চোরাকারবারিদের হাতে তুলে দিচ্ছে।
শরণার্থী বিশ্ব ঐতিহ্য সমূহকে আশ্রয় দিতে চাওয়া লুভর মিউজিয়ামে পৃথিবীর সবচেয়ে পর্যটক সমাগম হয়। গত বছর এ মিউজিয়াম প্রায় ৮৬ লাখ পর্যটককে স্বাগত জানিয়েছিল।