আগামী ৫ বছরে ৮০০ কোটি ডলার দিবে এডিবি
সাইদ রিপন: আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের জন্য অংশীদারিত্ব কৌশল তৈরি করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল মেয়াদে এ কৌশলপত্রের আওতায় বাংলাদেশকে ৮০০ কোটি ডলার বা ৬৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ-সহায়তা দেবে সংস্থাটি। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের জন্য থাকছে ২০০ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এর পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। এর আগের ৫ বছরে দেয়া হয়েছিল ৫০০ কোটি ডলার। সে অনুযায়ী আগামী ৫ বছরে সহায়তা বাড়াচ্ছে এডিবি।
গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ কৌশলপত্রের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন। কৌশলপত্র উপস্থাপন করেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজুহিকো হিগুচি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী বছরগুলোর জন্য রেলের সক্ষমতা বাড়ানো, নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি, চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়ন, ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। এডিবি নতুন অংশীদারিত্ব কৌশলের আওতায় বেশ কয়েকটি প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিতরণ, আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থার উন্নয়ন, পানি এবং নগর সেবা বাড়ানো, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু সহনশীল গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা এবং দক্ষতার উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
এ ঋণের সুদহার হবে প্রায় ৪ শতাংশ। পাঁচ বছরের গ্রেড পিরিয়ডসহ ১৫ বছরের মধ্যে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। গত কয়েক বছরে বেসরকারি খাতে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে এডিবি। সামিট গ্রুপ, গ্রামীণফোন, প্রাণ গ্রুপ, ব্র্যাক ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক এবং পূবালী ব্যাংক এডিবির ঋণ নিয়েছে।
এডিবির ঢাকা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, নতুন অংশীদারিত্ব কৌশলে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ খাতে বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। অর্থের অভাবে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ যাতে পিছিয়ে না পড়ে, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতে ২০০ কোটি ডলারের ঘোষণা থাকলেও ভালো প্রস্তাব পেলে আরও ঋণ দেওয়া হবে। বেসরকারি খাতের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মানের বিশেষজ্ঞ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
উত্তর ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনতে আন্ত:গ্রিড সংযোগ প্রকল্প স্থাপনে এডিবির ঋণ পাওয়া যাবে ২০১৭ সালে। এ গ্রিডের মাধ্যমে ভারত থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ আমদানি করা যাবে। এ প্রকল্পসহ আগামী পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের মোট ১০টি প্রকল্পে অর্থায়ন করবে সংস্থাটি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে খুলনা ৭৫০-৮৫০ মেগাওয়াট এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ এবং মহেশখালী ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাওয়াটের দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। সম্পাদনা: হামিদুর রহমান