রাজধানীতে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট, এক গ্রুপের বয়কট
সুজন কৈরী: প্যাকেজ ভ্যাট পুনঃবহাল ও বিভিন্ন পর্যায়ে ভ্যাট কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধসহ বেশ কিছু দাবিতে ধর্মঘট পালন করেছে ব্যবসায়ীর সংগঠন ‘ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম’। তবে তাদের এ ধর্মঘট বয়কট করেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে রাজধানীবাসীকে। জরুরি প্রয়োজনে কেনাকাটার জন্য দোকানে গিয়েও খালি হাতে ফিরেছেন অনেকে। ইস্কাটনের বাসিন্দা আজিজ হাসান জানান, সকালে জরুরি প্রয়োজনে শাহবাগের আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেটে গিয়ে বন্ধ পেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, মার্কেট বন্ধ পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছি। তবে পাশেই বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ওষুধের দোকানগুলো খোলা রয়েছে বলে তিনি জানান।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্মঘট পালন করে ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম। ধর্মঘটের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও দোকান বন্ধ ছিল। তবে কিছু স্থানে দোকান-পাট খোলা থাকতেও দেখা গেছে। পণ্য ও মার্কেটভিত্তিক ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোকে ধর্মঘটের সমর্থনে দোকানের সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। এছাড়া এলাকায় মাইকিং করা ও মূসক কমানোর দাবি জানিয়ে মিছিলও বের করেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবু মোতালেব বলেন, প্যাকেজ ভ্যাট আগের মতো পুনঃবহাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভ্যাট, ৩৬ লাখ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৩ শতাংশ টার্নওভার কর এবং ভ্যাট কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধে এ ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। রাজধানীর সকল মার্কেট ও দোকান সারাদিন বন্ধ ছিল। তিনি আরও বলেন, ২০ নভেম্বরের মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে বৃহৎ কর্মসূচি দেওয়া হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রাজধানীর সব মার্কেট বন্ধ রেখে প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি প্রেরণ, রাস্তায় লাগাতার কর্মসূচি ইত্যাদি। আমাদের দাবির সঙ্গে এফবিসিসিআইসহ সব ব্যবসায়ীদের সমর্থন রয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) কাছে গত রোববার এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ কর্মসূচি দিয়েছিল ঐক্য ফোরাম। গত মঙ্গলবার সংগঠনটির নেতারা জানান, কর্মসূচি পালনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তারা মঙ্গলবার দিনভর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির যুগ্ন মহাসচিব সাঈদ সুফি বলেন, এ ধর্মঘটে আমাদের সমর্থন নেই। নাম ফলানোর জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ওই সংগঠন। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের আন্দলোনের বিষয়ে জানানো হবে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে।
নতুন মূসক আইনে প্যাকেজ মূসকব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা, মূসকের পরিমাণ কমানো, লেনদেন সীমা তুলে নেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। চলতি বছরের বাজেট ঘোষণার সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নতুন মূসক আইনের বাস্তবায়ন এক বছর পিছিয়ে দিলেও সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূসকের পরিমাণ ঢাকায় ১৪ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৮ হাজার টাকা করেন। পাশাপাশি লেনদেন সীমা ৮০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে দেন। এসব নিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা আপত্তি করছেন। সম্পাদনা : ইসমাঈল হুসাইন ইমু