তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। শহর ও শহরতলীর মসজিদ-মাদ্রাসায় দুর্বৃত্তরা তালা মেরে পবিত্র কাবা শরীফের বিকৃত ছবি সাঁটিয়ে দেওয়ায় এ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা স্থানীয় বিশিষ্ট আলেমদের নিয়ে তাৎক্ষণিক সভা করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্বৃত্তদের ধরতে অভিযান চলছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বড় হুজুর সিরাজুল ইসলামের নামে প্রতিষ্ঠিত শহরের ভাদুঘরে জামিয়া সিরাজিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার প্রধান ফটকে ২টি তালা মেরে দেয় দুর্বৃত্তরা। সে সাথে পবিত্র কাবা শরীফের ছবির উপর মূর্তি বসিয়ে বিরাট পোস্টার সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। ভোরে মাদ্রাসার ছাত্ররা এ দৃশ্য দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। একই ভাবে শহরের কাউতলী জামে মসজিদ ও শহরতলীর বিজেশ্বরে জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় একই কায়দায় পোস্টার সাঁটানো হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জেলা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ঘটনাটি জানান। সদর থানা পুলিশ খবর পেয়ে মাদ্রাসায় পৌঁছে তালা ভেঙ্গে গেট খুলে দেয়। একের পর এক এসব ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সকাল ১১টায় জেলার শীর্ষ আলেমদের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঈনুর রহমান, জামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও জেলার প্রধান মুফতি মোবারক উল্লাহ, ভাদুঘর জামিয়া সিরাজিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মনিরুজ্জামান সিরাজী, দারুল আহকাম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সাজিদুর রহমান, কাজীপাড়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ইদ্রিস প্রমুখ।
সভায় এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে আলেমদের পক্ষ থেকে দাবী জানানো হয়। জেলার সম্প্রীতি রক্ষা এবং উত্তেজনা নিরসনে সবার সাহায্য ও সহায়তা কামনা করা হয় বৈঠকে। সভায় আগামী শনিবার জেলার সব মসজিদ-মাদ্রাসার ইমাম ও ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একটি গ্রুপ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাধারণ মানুষের মধ্য উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য এই কাজগুলো করছে। এই কাজগুলো কারা করছে আপনারা আমরা সবাই জানি। দেশকে জঙ্গিবাদ বানানোর জন্য একটি মহল এসব কাজে মদত দিচ্ছে। আমরা প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সম্পাদনা : মাহমুদুল আলম