আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো ও সন্ত্রাসকারীদের জনগণই প্রতিহত করবে : প্রধানমন্ত্রী
আজাদ হোসেন সুমন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যারাই জনগণকে পোড়াবে জনগণই তাদের প্রতিহত করবে। জানুয়ারি থেকে মার্চ সরকার পতনের আন্দোলনের নামে টানা ৯২ দিন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস প্রসঙ্গ এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন বেগম জিয়া বলেছিলেন, সরকার উৎখাত না করে নাকি ঘরে ফিরবেন না- সরকার উৎখাত করতে পারেনি। জনগণই ঠেকিয়েছিল তাদের। যারাই জনগণকে পোড়াবে জনগণই তাদেরকে প্রতিহত করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল জেলহত্যা দিবসের বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটা কথায়ই বিশ্বাস করিÑ আমরা স্বাধীনতা এনেছি। এই স্বাধীনতাকে আমাদের অর্থবহ করতে হবে। জাতির পিতাকে হত্যা করে জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করে, হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করে তারা ভেবেছিল আওয়ামী লীগের নাম-নিশানা মুছে দেবে। তিনি বলেন, খুনি মোশতাক মতা দখল করেই সেনাপ্রধান করল জিয়াউর রহমানকে। এর মানে এটাই স্পষ্ট যে, ১৫ আগস্টের ওই ঘটনায় খুনি মোশতাকের সঙ্গে জিয়াও জড়িত ছিল। আর সে কথাটা আত্মস্বীকৃত খুনি, যাদের আমরা বিচার করেছি, যাদের অনেকের ফাঁসি হয়েছে, তারা বিবিসিতে সাাৎকারে নিজের মুখে স্বীকার করেছেÑ জিয়ার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল, তাদের ইশারা দিয়েছিল এবং সমর্থন দিয়েছিল, এটা স্পষ্ট। অতএব, মোশতাক তাকে বানাল সেনাপ্রধান।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিতে ভয় পান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জানেন আদালতে হাজিরা দিলে শাস্তি পাবেন। এতিমের টাকা মেরে খেয়ে এখন পালাই পালাই ভাব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী যে চেতনা জেগে উঠেছে তাকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি তার জঙ্গিবিরোধী অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, দেশে কোনো সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থাকতে দেব না এবং তাদের মদদকারীরাও সাজা পাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতায় থাকায় আমাদের উন্নয়নের কর্মকা-ের ধারাবাহিকতা রয়েছে। আজকে কারও কাছে হাত পেতে নয়, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি। যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মতা বাংলাদেশ রাখে। কেউ অপবাদ দিলেই মাথা পেতে নিই না, চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিই। আজকে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছি। তিনি বলেন, আমরা যে পারি, সেটা তো ইংল্যান্ডকে দেখালাম। মাত্র তিন দিনের মাথায় টেস্ট ক্রিকেটের ১ নম্বর দেশ ইংল্যান্ডকে আমরা হারালাম। তারাও দেখল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগাররা কীভাবে হুংকার দিতে পারে, আর বিজয় আনতে পারে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্টের শহীদ, প্রয়াত জাতীয় চারনেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করব, এই স্বাধীনতার ইতিহাস, আমাদের অর্জনের ইতিহাস, গৌরবের ইতিহাস, বিজয়ের ইতিহাস- যে ইতিহাসকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল তা আগামী প্রজন্মের সবাই যেন জানতে পারে। নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারে।
স্মরণ সভায় জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিম-লীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ড. আব্দুর রাজ্জাক বক্তৃতা করেন। স্মরণসভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী