সিএনএন/ওআরসি জনমত জরিপ নেভাদা, অ্যারিজোনায় এগিয়ে ট্রাম্প ফোরিডা, পেনসিলভ্যানিয়াতে হিলারি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে সুইং স্টেটগুলোতে লড়াই জমে উঠেছে। বিশেষ করে অ্যারিজোনা, ফোরিডা, নেভাদা ও পেনসিলভ্যানিয়াতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে সিএনএন/ওআরসি পরিচালিত সর্বশেষ জনমত জরিপের তথ্যে। এর মধ্যে নেভাদায় শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফোরিডাতে আবার তার তুলনায় ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি কিনটন বেশি এগিয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে অ্যারিজোনায় ভালো অবস্থানে থেকে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। পেনসিলভ্যানিয়াতে আবার এগিয়ে রয়েছেন হিলারি। সিএনএনের খবরে বলা হয়, ২৭ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এ চারটি রাজ্যে জনমত জরিপ পরিচালনা করে সিএনএন ও ওআরসি। ২ নভেম্বর এ জনমত জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, পেনসিলভ্যানিয়াতে ট্রাম্পের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি সমর্থন পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন হিলারি। অন্যদিকে, অ্যারিজোনাতে ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন ৫ শতাংশ বেশি সমর্থনে। ২০১২ সালের নির্বাচনেও ঠিক একই ধারা বিদ্যমান ছিল। তবে ওই বছরের নির্বাচনে দুই প্রার্থীর প্রতি সমর্থনের মধ্যে যতটা ব্যবধান ছিল, এবারে ব্যবধান তার চেয়েও কম। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছরে ফোরিডাতে স্মরণকালের সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এখানে সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে হিলারির পে সমর্থন ৪৯ শতাংশের, ট্রাম্পের প্রতি ৪৭ শতাংশের। গত সেপ্টেম্বর মাসে সিএনএন/ওআরসি যে জরিপ চালিয়েছিল, তাতে ট্রাম্পের তুলনায় পিছিয়ে ছিলেন হিলারি। গত এক মাসেই তিনি ট্রাম্পকে পেরিয়ে গেছেন জনমত জরিপে। নেভাদাতেও জনমত জরিপের ফলাফল বদলে গেছে। এ রাজ্যে নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি সমর্থনে এগিয়ে ছিলেন হিলারি। সর্বশেষ জনমত জরিপে ট্রাম্পই এগিয়ে গেছেন ৩ শতাংশ ব্যবধানে। এই রাজ্যে সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে ওই সময় হিলারি ২ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে এখন ট্রাম্পের পে সমর্থন হিলারির তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি।
চারটি রাজ্যেই পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে হিলারির প্রতি সমর্থনের হার বেশি। একইভাবে পুরুষদের মধ্যেও ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন বেশি। শ্বেতাঙ্গরা ব্যাপকভাবে সমর্থন করছেন ট্রাম্পকে, অশ্বেতাঙ্গদেরও ট্রাম্পের তুলনায় হিলারির প্রতি সমর্থন অনেক বেশি। অ্যারিজোনা ও নেভাদায় আগাম ভোটে হিলারি খুব সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। ফোরিডাতে এ ব্যবধান বেশ বড়। অন্যদিকে, ৮ নভেম্বর অর্থাৎ নির্বাচনের দিন যারা ভোট দেবেন, এমন সম্ভাব্য ভোটাররা এ তিনটি রাজ্যেই ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এ েেত্র হিলারির সঙ্গে ব্যবধানটা দুই অঙ্কের।
দুই প্রার্থীর প্রতি সমর্থনের কারণের েেত্র নির্বাচনী ইস্যুগুলোতেও পার্থক্য রয়েছে। চারটি রাজ্যেই ট্রাম্পের পে সমর্থনের অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে অর্থনৈতিক নীতিকে। হিলারির পে এ েেত্র সমর্থনের মূল কারণ তার পররাষ্ট্র নীতি। অভিবাসন বা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় কোন প্রার্থী ভালো করবেন, তা নিয়ে প্রায় সমানভাবে বিভক্ত চারটি রাজ্যের ভোটাররা। অ্যারিজোনাতে আবার হিলারি এগিয়ে রয়েছেন স্বাস্থ্য নীতি নিয়ে। এ রাজ্যে প্রেসিডেন্ট ওবামার স্বাস্থ্যনীতির গ্রাহক বেশি। এ রাজ্যের ভোটাররা দেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখা প্রসঙ্গেও হিলারির প্রতিই বেশি সমর্থন দেখিয়েছেন। প্রেসিডেন্টসুলভ মেজাজ ও রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনের যোগ্যতাতেও সব রাজ্যেই এগিয়ে হিলারি। তবে হিলারির জন্য প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে তার সততা। চারটি রাজ্যেই সততা ও আস্থায় হিলারির চেয়ে ঢের এগিয়ে ট্রাম্প।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, জনমত জরিপ পরিচালনার সময়ের কারণেই হয়তো দুই জরিপের মধ্যে ব্যবধানগুলো প্রকট হয়েছে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় বাজে সময় কাটাচ্ছিলেন। তার ভিডিও টেপ ফাঁস হওয়া, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নারীর যৌন হয়রানির অভিযোগ তখন বড় ধরনের ভূমিকা রাখে ভোটারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে। অন্যদিকে সর্বশেষ জনমত জরিপ যখন পরিচালনা করা হয়, তখন হিলারি আবার ফেঁসে গেছেন এফবিআইয়ের ইমেইল তদন্তের ঘোষণায়। সম্পাদনা: ইমরুল শাহেদ