ঢাকা মহানগর বিএনপি এক মাসমেয়াদি আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির রূপ দিতে পারেনি দুবছরেও
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটি নিয়ে চলছে ঘোরতর জটিলতা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে এক মাসমেয়াদি আহবায়ক কমিটি গত দুবছরেও সমর্থ হয়নি কমিটির পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে। এ ব্যর্থতার পটভূমিতে নতুন কমিটি গঠনও প্রায় অনিশ্চিত। দলের ১৯ মার্চের কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে কমিটি করার তোড়জোড়ও থমকে গেছে। বর্তমানে এ আহবায়ক কমিটি ভুগছে অস্তিত্ব¡সংকটে।
কমিটির কর্মকা- থিতু হয়েছে ‘দিবসভিত্তিক’ কর্মসূচিতে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে দলের নেতাদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মির্জা আব্বাস তার একচ্ছত্র আধিপত্যে কুগিত করে নিতে চাইছেন পুরো মহানগর কমিটি। কমিটির অপরাপর নেতারা অপাংক্তেয়। যদিও মাঠের কর্মসূচিতে তাকে কমই দেখা যায়। আব্বাসের কর্মকা-ে মহানগরের নেতাকর্মী ছাড়াও তৃণমূলে বিরাজ করছে চরম ােভ হতাশা।
মহানগরীর এক নেতা বলেন, ইচ্ছা করলে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাথে সাাৎ করা যতটা না সহজ তার চেয়ে কঠিন মির্জা আব্বাসের প্রটোকল ডিঙ্গিয়ে সাাৎ করা। মির্জা আব্বাস চলেন নিরাপত্তা বহর নিয়ে। তার গাড়ির সামনে-পেছনে থাকে নিরাপত্তাকর্মীদের অন্তত তিনটি গাড়ি। তাকে কাছে না পাওয়ায় এ নিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে ােভ ও অভিযোগ রয়েছে। বেশকজন নেতা তারেক রহমানকেও বিষয়টি জানিয়েছেন।
তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর কমিটি নিয়ে তারা মূল্যায়ন করছেন। আগামী দিনের জন্য একটি শক্তিশালী কমিটি করতে চান। এ কারণে কমিটির মূল্যায়ন করছেন। তাদের মতে, দেশজুড়ে ৯৩ দিনের উত্তাল আন্দোলনের সময় অব্যার্থ আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র বলে বিবেচিত রাজধানী ঢাকা ছিল নিস্তরঙ্গ। মহানগরের নতুন কমিটির নেতৃত্বের বিএনপি অনির্বাচিত সরকার হঠাও আন্দোলনে শক্তিমত্তা নিয়ে দাঁড়াতে পারেনি। দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতেও তার দেখা পাননি। অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারপারসনকে সমবেদনা জানাতে গুলশানে বা জানাজায় শরিক হতে বায়তুল মোকাররম- কোথাও যাননি তিনি।
এদিকে সর্বশেষ জানা গেছে, বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটির মেয়াদ দুবছর আগে শেষ হওয়ায় কমিটি ভেঙ্গে তিনি মহানগরীর রাজনীতি নতুন নেতৃত্বের হাতে তুলে দিতে চান। তবে শেষাবধি তা নিয়ে পদে পদে প্রতিবন্ধকতা চলছে বলে জানা গেছে। মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা চাইছেন, সরকারের সাথে আতাত নয়, হয় পূর্ণ শক্তি নিয়ে আব্বাসকে মাঠে নামতে হবে। আর কেবল বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি ঢাকার বাইরে বাড়ালে হবে না। ঢাকায় বাড়াতে হবে। ঢাকায় দলের ভীত সুদৃঢ় হলে আগামী দিনে দলের অনেক কাজের ও আন্দোলনে সাফল্য আসতে পারে। না হলে আবারও ২০১৩, ২০১৪ সালের মতো আন্দোলনে বিএনপি মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। সম্পাদনা : মাহমুদুল আলম