কূটনীতির আড়ালে গুপ্তচরবৃত্তি: পাকিস্তান থেকে ৮ জনকে ফেরত নিচ্ছে ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতের আট নাগরিককে গুপ্তচর হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইসলামাবাদ। এসব ব্যক্তি ভারতীয় হাই কমিশনের অধীনে কূটনীতির আড়ালে পাকিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে জড়িত রয়েছে বলে দাবি করছেন পাক কর্মকর্তারা। খবরটি দিয়েছে ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
সরকারি তথ্যের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি এসব কূটনীতিকের যে পরিচয় তুলে ধরেছে তা এমন- ‘অন্তত আটজন দূতাবাসকর্মী ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং বা ‘র’ এবং ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো বা আইবি’র হয়ে কাজ করছিলেন। এর মধ্যে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করা রাজেশ কুমার অগ্নিহোত্রি হচ্ছেন পাকিস্তানে র-এর স্টেশন চিফ। তার দায়িত্ব ছিল পাকিস্তান-চীন অর্থনৈতিক করিডরের কাজ বিঘিœত করা। এছাড়া, সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরি করা এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিকে তালেবানকে প্রয়োজন অনুসারে কাজে লাগানোর দায়িত্বও পালন করেন তিনি।’
‘আরেকজন র-এর কর্মকর্তা অনুরাগ সিং, সরকারিভাবে তিনি ভারতীয় দূতাবাসে বাণিজ্য সচিব হিসেবে কাজ করছেন। তিনি সরাসরি অগ্নিহোত্রির অধীনে কাজ করছেন। পাক-চীন বাণিজ্যের বিষয়ে বিতর্ক তৈরির কাজে জড়িত ছিলেন অনুরাগ। এছাড়া, তিনি গিলগিট-বালতিস্তানে অসন্তোষ ও বিােভ সৃষ্টির কাজেও জড়িত ছিলেন।’
‘ভিসা অ্যাটাশে হিসেবে কাজ করা অমরদীপ সিং ভাট্টিও একজন র-এর কর্মকর্তা। তার প্রধান কাজ ছিল পাকিস্তানে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু, শিখ ও আহমাদি সম্প্রদায়ের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করা। একইভাবে র-এর কর্মকর্তা ধর্মেন্দ্র সোধি বেলুচিস্তানে বিুব্ধ লোকজনকে সংগঠিত করে পাক সরকারের বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। চিকিৎসা ভিসার নামে তিনি ভুয়া ভিসা দিয়ে বেলুচিস্তানের বিুব্ধ শীর্ষ পর্যায়ের লোকজনকে ভারতে নেয়ার ব্যবস্থা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।’
‘ভারতীয় হাই কমিশনের স্টাফ সদস্য হিসেবে বিজয় কুমার বর্ম র-এর হয়ে কাজ করে আসছেন। তার জন্য টার্গেট এরিয়া ছিল আজাদ-কাশ্মীর এবং তার প্রধান দায়িত্ব ছিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো।’ মাধবন নন্দ কুমার নামে র-এর আরেক কর্মকর্তার নামও এসেছে পাক সরকারি তথ্যে যার প্রধান কাজ ছিল বেলুচিস্তানে গোলযোগ সৃষ্টি করা। এছাড়া, বর্তমানে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করা বলবীর সিং বাস্তবে ভারতের গোয়েন্দা ব্যুরো বা আইবি’র কর্মকর্তা। তিনি কূটনৈতিক মর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নানা কর্মকা-ে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বলবীর কাজ করছিলেন সুরজিত সিংয়ের সঙ্গে; সুরজিতকে গত সপ্তাহে পাকিস্তান অবাঞ্ছিত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তান থেকে চলে যাওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়। একইভাবে জয়াবালান সেনথিল নামে আরেক কর্মকর্তা ভারতীয় হাই কমিশনে ওয়েলফেয়ার অফিসার হিসেবে কাজ করছিলেন কিন্তু তিনিও ছিলেন আইবি’র এজেন্ট এবং কূটনৈতিক মর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কর্মকা-ে জড়িত ছিলেন। অবশ্য, এসব ব্যক্তির বিষয়ে পাকিস্তান এখনো সরকারিভাবে কোনো ঘোষণা দেয়নি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ