কাশ্মীরের সফিয়ানে জঙ্গি নিহত আহত ভারতীয় সেনা
* শ্রীনগরে লাশ দাফন নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৩০ * সীমান্তে রেঞ্জারের পরিবর্তে সেনা মোতায়েন পাকিস্তানের
ইমরুল শাহেদ : জম্মু-কাশ্মীরের সফিয়ান জেলার দুপজান গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনী ও জঙ্গিদের মধ্যে গুলি বিনিময়কালে এক জঙ্গি নিহত হয়েছে এবং একজন ভারতীয় সেনা আহত হয়েছে। এছাড়া কাশ্মীরে জানাজায় ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে ৩০ জন আহত হয়েছে। শ্রীনগরের শালিমার এলাকার অধিবাসী ষোল বছরের কায়সার সুফী গত ২৭ অক্টোবর নিখোঁজ হন। একদিন পরই একটি নালা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। কায়সার সুফীর জানাজা ও দাফনের জন্য শহিদ কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীরা লাশ বহনকারীদের উপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। তাতে এ আহতের ঘটনা ঘটে।
সফিয়ানে নিহত জঙ্গির পরিচয় সম্পর্কে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, সে কাশ্মীরের স্থানীয় তরুণ। সম্প্রতি সে হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। জানা গেছে, নিরাপত্তা বাহিনী দুপজান গ্রামে তল্লাশি অভিযান শুরু করলে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে খবর ছিল যে, সেই গ্রামে বেশ কয়েক জন জঙ্গি রয়েছে। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ‘এলাকাটি খুব দুর্গম। সেখানে জঙ্গি রয়েছে বলে খবর পাওয়ায় সেনা ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান শুরু করে।’ নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে ফেললে গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়। জঙ্গিরা কর্ডন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। সেখানে একজন জঙ্গি মারা গেলেও তিন জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সেখানে একটি অস্ত্র পাওয়া গেছে।
কাশ্মীর আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরে এখন নিরাপত্তা বাহিনী ও জঙ্গিদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে পাকিস্তান। তাই উরি হামলার দায় পড়েছে পাকিস্তানের উপর। জঙ্গি দমনের নামে ভারত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় পাকিস্তানে। এর পর থেকে উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তার পর থেকে লাগাতার অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান। জবাব দিয়েছে ভারতও। এর মধ্যে সীমান্তে রেঞ্জারদের সরিয়ে সেনা মোতায়েন করেছে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে নিয়ে আসা হচ্ছে প্রচুর গোলা-বারুদ। সীমান্তের ১৯০ কিলোমিটার বরাবর পাকিস্তান চৌকিগুলোর দায়িত্ব সাধারণত থাকে পাকিস্তান রেঞ্জারদের হাতে। কিন্তু তাদের হাত থেকে সেই চৌকিগুলোর দায়িত্ব এবার নিজেদের হাতে নিচ্ছে পাকিস্তান সেনা অফিসাররা। প্রায় প্রতিদিন গাড়ি করে নিয়ে আসা হচ্ছে একাধিক জওয়ান এবং গোলা-বারুদ। গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে এমন তথ্য জানতে পেরেছে ভারতীয় সেনা। গত ৮-৯ দিন ধরে বিএসএফ সদস্যদের নজরেও এটা পড়েছে। সেনার এক উচ্চপদস্থ কর্তার মতে, ‘সীমান্তের ওপারে সেনাঘাঁটিগুলোর নিয়ন্ত্রণ রেঞ্জার্সদের হাতে রয়েছে কিনা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে পাকিস্তান সেনার তৎপরতা যে বেড়েছে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। গত আট-নয় দিন ধরে এটা চলছে। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে বিএসএফের সঙ্গে গোলাগুলির সময় ১৪ জন পাকিস্তানি রেঞ্জার নিহত হয়েছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে। সম্পাদনা : আলাউদ্দিন