আয়কর মেলায় কর আদায় ১৪শ’ ১৭ কোটি ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫১
শারমিন আজাদ: শনিবার ছুটির দিনে আয়কর মেলায় ছিলো উপচেপড়া ভিড়। মেলা থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে আয়কর সেবা গ্রহণ করেছেন ছয় লাখ আট হাজার ১ জন করদাতা। আর কর আদায় হয়েছে ১৪শ’ ১৭ কোটি ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা। ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন রাজস্ব ভবনে আয়োজিত মেলায় অনলাইনে রিটার্ন জমা এবং ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড প্রদানেও ছিলো ব্যাপক ভিড়। নতুন টিআইএন খুলেছে ২৭ হাজার ২২২ জন। রিটার্ন দাখিল করেছে ১ লাখ ২১ হাজার ১৩১ জন।
মেলার পঞ্চমদিনে গতবারের চেয়ে নতুন টিআইএন এর সংখ্যা বেড়েছে ১৪৩ শতাংশ। আয়কর আদায় বেড়েছে ছয় শতাংশ। এবারই প্রথম মেলায় অনলাইন রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা করেছে রাজস্ব বোর্ড। এ ব্যবস্থায় রিটার্ন দাখিলে করদাতাদের একবার সার্কেল অফিস থেকে নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে। আয়কর মেলায় বিশেষ ব্যবস্থায় ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছে। এটা পাওয়ার জন্য করদাতাদের ই-টিআইএন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সঙ্গে আনতে হবে। গত কয়েকদিনে মেলায় ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড গ্রহণ করেছেন দেড় হাজারের বেশি করদাতা। আর এ সেবা গ্রহণ করেছেন প্রায় ৫ হাজার জন।
এবারের আয়কর মেলার প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন দাখিলের শেষ সময়সীমা বেধে দেওয়ায় রাজস্ব আদায়ে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। এরপর কর দিতে হলে ২ শতাংশ হারে জরিমানা গুনতে হবে করদাতাদের। তিনি আরও বলেন, এর আগে রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ছিলো ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে এবার আরও দুই মাস সময় বাড়িয়ে আয়কর দিবসকেই রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন ঠিক করেছে এনবিআর। আর তাই করদাতারা অনেক সময় পেয়েছেন বলে মনে করছে রাজস্ব বোর্ড। আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ ও কর পরিশোধ বিষয়ে সেবা প্রদানে রয়েছে ২৩টি হেল্প ডেস্ক। মেলায় আসা মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য রয়েছে আলাদা বুথ। আয়কর সংক্রান্ত সব ধরনের ফরম বিনামূল্যে দেওয়া হয়। ৭ দিনের এ মেলায় আয়কর রিটার্ন দাখিল, নতুন ও পুরাতন ই-টিআইএন গ্রহণ, ই-ফাইলিং, কর প্রদান(ই-পেমেন্ট ও কিউ ক্যাশ) এবং কর সংক্রান্ত সব তথ্য প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প বুথ থেকে ভ্যাট বিষয়ে যেকোনো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আরও সেবা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক বুথ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, ট্যাক্সেস আপীলাত ট্রাইব্যুনাল, ঢাকা, সঞ্চয় অধিদফতর, কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগ, বিসিএস কর একাডেমি, বিসিএস কাস্টমস একাডেমি।
এখনই ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে কর আদায় করার পরিকল্পনা নেই রাজস্ব বোর্ডের। তবে তরুণ প্রজন্মকে আয়কর দিতে আগ্রহী করে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। মেলায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কর শিক্ষা ফোরাম গঠন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। ৫ দিনে এ শিক্ষা ফোরামে কর বিষয়ে সচেতনতামূলক বিভিন্ন শিক্ষা গ্রহণ করেছে রাজধানীর ৫টি স্কুল। উদয়ন, সেন্ট যোসেফ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি, শের-ই-বাংলা নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এতে অংশ নিয়েছে। এ ফোরামের মূল উদ্দেশ্য হলো, তরুণ প্রজন্মকে কর বিষয়ে সচেতন করা। এসব ছাত্র-ছাত্রী মেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করানোর পরিকল্পনাও রয়েছে এনবিআরের। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের একষট্টিটি জেলা, ১১টি উপজেলাসহ মোট ৭২টি স্পটে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন