শাহানুজ্জামান টিটু: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় আওয়ামী লীগকে দায়ী করে ওই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি। নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ চেয়েছে দলটি।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম।
নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়েরে উপর হামলাস্থল ঘুরে দেখে তাতে আওয়ামী লীগের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশবাসীর কাছে আজ স্পষ্ট হয়েছে, কারা এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার হোতা। গত ৭ বছরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার প্রত্যেকটি ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হাত রয়েছে, এটি আজ দিবালোকের মতো স্পষ্টÑ যোগ করেন হাফিজউদ্দিন। হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর স্থানীয় তিন নেতাকে বহিষ্কার করায় আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদও জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের নেতৃবৃন্দকে সাময়িক বহিষ্কার করে ঘটনাটি সামলাবার চেষ্টা করেছেন। তারা দলীয় নেতৃবৃন্দকে শাস্তি দিয়ে জনসমক্ষে তাদের স্বরূপ উন্মোচন করেছেন।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশে গত শুক্রবার হাফিজের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল নাসিরনগরের ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পল্লী ঘুরে আসেন।
ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, নাসিরনগরে আমরা কোনো রাজনীতি করতে যাইনি। ঘটনাস্থলে এর ব্যাপকতা দেখে আমরা বেদনাহত হয়েছি, যার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। তিনি আরও বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ ধরনের হামলা আমাদের স্তম্ভিত করেছে। পুলিশ বাহিনী ওই হামলার সময়ে তাদের কোনো কাজে লাগেনি। বরং তাদের প্রতিবেশী মুসলিম পরিবারগুলো এসে মন্দির ভাঙার কাজে বাধা দিয়েছে এবং হিন্দু পরিবারগুলো যখন আশ্রয় নিতে গেছেন, তাদের আশ্রয় দিয়েছে।
দ্বিতীয় দফা হামলার জন্য পুলিশের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন সাবেক এ সেনা কর্মকতা। তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীর পেশাদারিত্ব একেবারেই নেই। তারা তাদের মৌলিক দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে এ কারণে যে এটি একটি দলীয় বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তারা বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী নেতাকর্মীদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মিথ্যা মামলা দায়েরের কাজেই এ পুলিশ বাহিনীর অধিকাংশ সময় ব্যয় হয়।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমরা লক্ষ্য করেছি, সরকারের ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা হিন্দু সম্পত্তি গ্রাস করেছেন। পুরনো জেলাগুলোতে স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই হিন্দুদের সম্পত্তিগুলো আওয়ামী লীগের লোকেরা দখল করে রেখেছেন এটা প্রমাণিত সত্য।
নাসিরনগরে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা দিতে সৈয়দ একরামুজ্জামানের নেতৃত্বে অচিরেই বিএনপি কাজ শুরু করবে বলে জানান বিএনপির এ নেতা। সম্পাদিত: শারমিন আজাদ