এই গণঅভ্যুত্থান ১৫ আগস্টেরই প্রতিবাদ
ইনাম আহমেদ চৌধুরী
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। আমরা জানি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হয়েছিল। এ রকম নৃশংস একটা কাজ যারা করল, তারা দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিল। সেখানে কে রাজা, কে উজির এ রকম কেউ ছিল না। আগস্টের পরবর্তী যে কয়টা মাস, সে কয়টা মাস ছিল খুব কঠিন সময়, দুর্বিষহ। তখন চরম একটা অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছিল। বিপথগামী কিছু সৈনিক ও অফিসার ওই নৃশংস হত্যাকা-, তার পরবর্তী সময়ের অনিশ্চয়তার জন্য দায়ী ছিল। তখন যে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা ছিল সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক। যদিও খোন্দকার মোশতাক দাবি করেছিলেন, তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে ফিরিয়ে এনেছে। ওই সময় স্বাধীনতাকামী, শান্তিকামী, গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এবং সিপাহী, তারা এই অবস্থা মেনে নিতে রাজি ছিল না। তারা চাচ্ছিল শান্তি ফিরে আসুক দেশে। তখন সাধারণ মানুষ এবং সিপাহীরা একসঙ্গে রাস্তায় নেমেছিল। একসঙ্গে সংহতি প্রকাশ করল যে, আমরা একটা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ফিরে যেতে চাই। দেশের সাধারণ মানুষ, নীতিনির্ধারক, সেনাবাহিনী তারা কোনো অরাজকতা মেনে নিতে রাজি হন না এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মঙ্গলের জন্য পদক্ষেপ নিতে তারা দ্বিধাবোধ করেন না।
বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস কয়েক পর ৩ নভেম্বর জেলের ভিতর নির্মমভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হলো। জেলহত্যার পরবর্তীকালে অসহনীয়, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল দেশে। সাধারণ মানুষও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল। সাধারণ মানুষ, সিপাহী … নিয়মতান্ত্রিকভাবে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে এলো, অনেক মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন, তাদের নিয়ে সরকার গঠন হলো। চরম অস্থিরতার অবসান হলো। এটা সম্ভব হয়েছিল সিপাহি-জনতার সংহতির মাধ্যমেই। এটা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জয়, তাদের শান্তিপ্রিয়তার জয়, তাদের দেশপ্রেমের বিজয়। ৭ নভেম্বর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হলো দেশে। আমার কাছে মনে হয়, এই গণঅভ্যুত্থান ১৫ আগস্টেরই প্রতিবাদ।
পরিচিতি: ভাইস চেয়ারম্যান, বিএনপি
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান