ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুপথযাত্রী মাদ্রাসাছাত্রী
সোহেল সানী, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের পার্বতীপুরে হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় গুরুতর অসুস্থ মাদ্রাসাছাত্রী মিনা বেগম (১৪) এখন মৃত্যু পথযাত্রী। তার ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও ভবিষ্যৎ জীবনের শংকায় চরম উদ্বিগ্ন তার পরিবার।
জানা গেছে, মিনা বেগম পার্বতীপুর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের হয়বতপুর গ্রামের ভ্যানচালক রাজুর (৩৫) ছোট মেয়ে ও নীলকুঠির ডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী। বছর দেড়েক আগে মিনা’র বাম পায়ের গোড়ালীতে টিউমার দেখা দেয়। নীলকুঠির ডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও হোমিও চিকিৎসক আনিসুর রহমান মিনার টিউমারটি দেখে নিজে অপারেশন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এতে মিনার পরিবারের কেউ রাজী না থাকলেও শিক্ষকের দাবী নিয়ে একদিন তিনি মিনাদের বাড়ীতে এসে অনেকটা জোরাজুরি করে ব্লেড দিয়ে টিউমারটি কেটে ফেলে ৭টি সেলাই দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরও ক্ষত স্থান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ ও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মিনার পরিবার এ অবস্থার জন্য হাতুড়ে ডাক্তার আনিসুর রহমানের ভুল চিকিৎসাকেই দায়ী করেন। তারা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে না পেরে মেয়ের সুচিকিৎসার জন্য বিভিন্ন স্থানে ছোটাছুটি করতে থাকেন।
অবস্থার অবনতি ঘটলে গত ২৩ অক্টোবর/১৬ মিনাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের ডাক্তাররা ক্ষত স্থানের ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য সুপারিশ করেন। পরে ঢাকায় রোগীর নমুনা পরীক্ষায় মিনার পায়ে ক্যান্সারের উপস্থিতির প্রমাণ মেলে বলে তার চিকিৎসক, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক্সের ডাক্তার নাজির হোসেন জানান।
এদিকে, দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর চিকিৎসার পরও মেয়ের অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় মিনার মা মর্জিনা বেগম গত ১৩ অক্টোবর হাতুড়ে ডাক্তার আনিসুর রহমানের বিচার দাবী করে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
গত ১৭ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরফদার মাহমুদুর রহমান অভিযুক্ত হোমিও ডাক্তার আনিসুর রহমানকে ডেকে নিয়ে তাকে তিরস্কার করেন এবং ৭ দিনের মধ্যে এ ঘটনার সুরাহা করার জন্য মোমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আ. ওহাব মন্ডলকে নির্দেশ দেন। সম্পাদনা : তারেক