কক্সবাজারে শুঁটকি উৎপাদন শুরু
ফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার : প্রতি বছর কক্সবাজারে উৎপাদিত শুঁটকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিক্রি হয় বিদেশের বাজারে। ফলে উপার্জিত হয় শত শত টাকা বৈদেশিক মুদ্রা। তাই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এ বছর ও কক্সবাজার উপকূলে শুরু হয়েছে শুঁটকি উৎপাদন।
এরই মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। চলতি মৌসুমে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এ অঞ্চলে শুঁটকি উৎপাদন চলবে। এ সময়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার শুঁটকি উৎপাদনের আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার পৌরসভার আওতাধীন উপকূলীয় এলাকা নাজিরারটেক, ফদনারডেইল, কুতুবদিয়াপাড়া ও সমিতিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, সাগরতীরে বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা শুঁটকিমহালে (শুঁটকি তৈরির কারখানা) শ্রমিকরা মাছ প্রক্রিয়াজাতের কাজ করছেন। এদের মধ্যে কেউ ট্রলার থেকে মাছ কাঁধে করে মহালে নিয়ে আসছেন, আবার অনেকেই মাছ রোদে শুকানোর জন্য মাচায় দিচ্ছেন, কেউ বিক্রির জন্য শুঁটকি বস্তা ভরছেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বৃষ্টির কারণে গত জুলাই থেকে শুঁটকি উৎপাদন বন্ধ ছিল। শুঁটকির সঙ্গে জড়িত শ্রমিক ও ব্যবসায়ী উভয়ের সংখ্যাই বাড়ছে। গত বছর প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক শুঁটকি প্রস্তুত ও বিক্রির কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এবার তা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক খালেদ বিন জাহেদ বলেন, বৃষ্টির কারণে গত ১ জুলাই থেকে তিন মাস সব মহালে শুঁটকি উৎপাদন বন্ধ ছিল। তবে অক্টোবর থেকে আবারো পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়। এ অঞ্চলে শুঁটকি উৎপাদন দিন দিন উৎপাদন বাড়ছে। এবার প্রায় অর্ধশত নতুন ব্যবসায়ী এ কাজে যুক্ত হয়েছেন। সোনাদিয়ার মগচর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ৩০টির বেশি মহালে রোদে বিপুল পরিমাণ মাছ শুকানো হচ্ছে। এর মধ্যে লইট্যা ও ছুরি শুঁটকি বেশি। জেলেরা মাছ ধরে এখানে বিক্রি করছেন।
জেলে হাবিবুর রহমান জানান, এ অঞ্চলে মাছ ধরার জন্য ছোট ইঞ্জিনের ট্রলার রয়েছে পাঁচ শতাধিক। প্রতিদিন এসব ট্রলারে ১০ থেকে ৩০ লাখ টাকার মাছ ধরা পড়ছে।
কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান জানান, বর্তমানে জেলার প্রায় ছয় হাজার ট্রলার সাগরে গিয়ে ইলিশ, কোরাল, লাক্ষ্যা, চাপা, কামিলা, হাঙর, রূপচাঁদা, পোপা, রাঙাচকি, মাইট্যা, কালো চাঁদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অংশ উপকূলে শুঁটকি করা হচ্ছে। সম্পাদনা : তারেক