দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েই চলছে
বাগেরহাট প্রতিনিধি : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাটসহ ১০ জেলার দিন দিন শিশুশ্রমের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দারিদ্র, অশিক্ষা, পারিবারিক বিচ্ছেদ, বড় পরিবার ছাড়াও পারিবারিক বিভিন্ন আর্থিক সমস্যার সৃষ্ট শিশুরাই মূলত হয়ে উঠছে শিশুশ্রমিক।
সরেজমিনে জানা যায়, আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে এদের বড় একটি অংশ মাদক সেবন, বিক্রি ও বহনের পেশায় লিপ্ত রয়েছে। বাংলাদেশে ১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের শিশু হিসাবে চিহ্নিত করেছে। শ্রম সংস্থার হিসাবে যে সব কাজ শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সে ক্ষেত্রে শ্রম নিয়োগের বয়স কোনো অবস্থাতেই ১৮ বছরের কম হবে না। হালকা কাজের ক্ষেত্রে এদের ১৮ বছরের নিচের শিশুদের নিয়োগ করা যাবে।
আইএলওর তথ্যে জানা যায়, বাংলাদেশে শিশু শ্রমিকরা ৩৪৭ ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকা-ের সাথে জড়িত। এর মধ্যে ৪৭ ধরনের কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ কাজের মধ্যে রয়েছে ব্যাটারি, রাসায়নিক কারখানা, যৌন কর্ম, পরিবহন খাত, ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করা, লেদ মেশিন, ওয়েল্ডিংয়ের কাজ, অটো মোবাইল কারখানা, রিকশা ও ভ্যান চালানো, বিল্ডিংয়ের রাজমিস্ত্রীর কাজ, জুয়েলারি শিল্পে কারিগরের কাজ, চাল ও মসলার কারখানায় কাজ, মাদক দ্রব্য বিক্রি, অস্ত্র বহন, ইটভাটা ও চোরাচালানি ইত্যাদি।
সমাজের বিশিষ্ট জনদের মতে, পারিবারিক ও আর্থ সামাজিক মূল্যবোধের কারণে ৬ থেকে ৭ বছর বয়সেই বাংলাদেশের শিশুদের বড় একটি অংশ জীবন ধারনের জন্য শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। দারিদ্রের জন্য এদের অনেকেই স্বাস্থ্য, পুষ্টি, বাসস্থান, শিক্ষা, বিনোদন ও জীবনের নিরাপত্তা লাভের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। রাত জেগে এদের মাঝে মধ্যে কাজ করা অবহেলা প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাব, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করা, কম মুজুরী, মালিকের দুর্ব্যবহার, পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাব এবং দীর্ঘ সময় ধরে বড়দের সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করার ফলে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে এইসব শিশুরা। শুধু তাই নয় নানা ইনফেকশন, চর্মরোগ, চোখের সমস্যা, শ্রবণ সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, পেটের পীড়া ও মাথা ব্যথাসহ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এরা। জেলায় প্রতি ১০ জন শিশুর মধ্যে একজন শিশু শ্রমিক রয়েছে। এসব শিশু বিভিন্ন দোকান, হোটেল রেস্তোরা, ওয়ার্কসপ, কারখানা, ভান্ডারির দোকান, টেম্পো, গাড়ীর হেলপার, নির্মাণ ও কাঠমিস্ত্রির হেলপার, বসত বাড়ীতে কাজ, বাদাম, চকলেট বিক্রির কাজ, চটপটির দোকানসহ ভ্রাম্যমাণ খাবার পানির দোকানে শ্রম দিচ্ছে। সম্পাদনা : তারেক