এস এম নূর মোহাম্মদ: ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বেআইনিভাবে গড়ে তোলা বিজিএমইএর ১৬ তলা ভবন নিজেদের খরচে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। বিজিএমইএ তা না করলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। আর ভবন ভাঙার টাকা তারা বিজিএমইএর কাছ থেকে আদায় করবে। তবে আইন অনুযায়ী বিজিএমইএ আপিল বিভাগের এ রায় পুনর্বিবেচনার জন্য ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে পারবে।
ভবনটি ভেঙে ফেলতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে গত ২ জুন রায় দিয়েছিল আপিল বিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চের দেওয়া ৩৫ পৃষ্ঠার এ রায় গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
রায়ে বলা হয়, ভবন নির্মাণ আইন-১৯৯৬ অনুযায়ী রাজউক থেকে নকশা অনুমোদনের জন্য জমির মালিকানার প্রমাণপত্র দাখিল করতে হয়। জমির মালিকানা সঠিক হলে আইন অনুযায়ী রাজউক নকশা অনুমোদন করতে পারে। কিন্তু আলোচিত এ জমিটি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাছ থেকে নিয়েছে বিজিএমইএ। অথচ ইপিবি এ জমির মালিকই নয়।
আদালত রায়ে আরও বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য জলাধার আইন-২০০০ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ অনুযায়ী পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতে হয়। এখানে সেটাও অনুপস্থিত। এ ভবনটি দেশের সকল আইন লঙ্ঘন করে নির্মাণ করা হয়েছে- এটা বলতে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই।
এর আগে হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছিল, বিজিএমইএ ভবনটি সৌন্দর্যম-িত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। এ ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট না করা হলে শুধু হাতিরঝিল প্রকল্পই নয়, সমস্ত ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে।
প্রসঙ্গত, রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা নিয়ে ২০১০ সালে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডিএইচএম মনির উদ্দিন আদালতে উপস্থাপন করেন। এতে ওই বছরের ৩ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে রুলের উপর চূড়ান্ত শুনানি করে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন আদালত। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করলে চলতি বছর আপিল বিভাগও তা খারিজ করে দেন। সম্পাদনা: আনোয়ার