নেপথ্যে আধিপত্য ও দলীয় কোন্দল দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ দুজনকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা
মাসুদ আলম ও মোশায়রা আক্তার জলি (দাউদকান্দি): কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর মোড়ে একটি মাইক্রোবাসে হামলা চালিয়ে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় গৌরীপুর মোড়ে সিএনজি স্ট্যান্ডে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত মনির হোসেন সরকার জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তবে পুলিশ বলছে আধিপত্য বিস্তার ও দলীয় কোন্দলের কারণে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটতে পারে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকার ও তার সহযোগীরা মাইক্রোবাসে করে কুমিল্লা আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে যাচ্ছিল। মাইক্রোবাসটি দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর মোড়ে সিএনজি স্ট্যান্ডে যানজটে আটকা পড়লে প্রায় ১২ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত গাড়িতে গুলি চালায়। এ সময় মনির হোসেনসহ তার সহযোগীরা গাড়ি থেকে নেমে এলে তাদের এলোপাতাড়িভাবে গুলি ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রক্তাক্ত অবস্থায় সকাল পৌনে ১০টায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মনির হোসেন সরকার ও তার গাড়ি চালক মহিউদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। মনিরের বুকের বাম পাশে একটি গুলির ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় আহত অলি (৩০), সুমন (২২) ও ইসমাইল ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আলী হাসান অন্য একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও দলীয় কোন্দলের কারণে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটতে পারে। গত মাসে তিতাস উপজেলার কড়িকান্দি বাজারে চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকারের উপর দুষ্কৃতকারীরা হামলা করেছিল। তার সঙ্গে স্থানীয় অনেকের দ্বন্দ্ব রয়েছে। নিহত চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি থানার ওসি মো. আবু ছালাম মিয়া জানান, জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হামলা চালানো হতে পারে। বেশ কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত চলছে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান, সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় পাঁচজনকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের শরীরে গুলি ও কোপের চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তর করা হবে। হাসপাতালে আসা মিন্টু মিয়া সরকার জানান, সকালে একটি মাইক্রোবাসে করে তারা মামলার হাজিরা দিতে আদালতে যাচ্ছিলেন। পথে গৌরিপুর আনোয়ার হাসপাতালের সামনে তাদের গাড়ি যানজটে পড়লে ১০-১২ জন ‘সন্ত্রাসী’ হেঁটে এসে তাদের দিকে এলাপাতাড়ি গুলি ছোড়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যায়। ধারণা করা হচ্ছে পূর্বশত্রুতার জেরে এ হামলা চালানো হয়েছে। সম্পাদনা: শারমিন আজাদ