রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ না করলে ২৬ নভেম্বর মহাসমাবেশ
রফিক আহমেদ : তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দররক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, সরকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে সরে না এলে ২৬ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ হবে। আনু মুহম্মদ বলেন, আশা করছি সরকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে অবশ্যই সরে আসবে। যদি সরকার এ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তবে সমাবেশ হবে না। আর সরে না এলে আমাদের ২৬ নভেম্বর পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মঙ্গলবার আমাদের অর্থনীতিকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানালেন তিনি।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, যারা বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর দূষণ, দখল; টঙ্গ,ি তেজগাঁও, হাজারীবাগ, তারাবো, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, ইপিজেট ও ঘোড়াশালের বিভিন্ন স্থানে দূষণ বন্ধ করতে পারে না- তারা সুন্দরবন ধ্বংস প্রক্রিয়া বন্ধ করবে কিভাবে? তিনি বলেন, দেশের বেশিরভাগ কারখানায় ইটিপি নেই। ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় কেমিকেলের পাশেই বিস্কুট কারখানা, আইসক্রিম কারখানার পাশে লোহার কারখানা। সরকার দেখেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না । সেই সরকার দুইশ কিলোমিটার দূরে গিয়ে দূষণ ও বন ধ্বংসের প্রক্রিয়া রোধ করবেÑ এটা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজ বন্ধ না হলে আগামী ২৬ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দররক্ষা জাতীয় কমিটি। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ বন্ধ করার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের সমাবেশ আবশ্যই হবে।
সূত্র জানায়, সুন্দরবন প্রশ্নে সরকার দৃঢ় অবস্থানে থেকে শীতল পর্যায়ে এসেছে। কারণ সরকার কোনোভাবেই নিজেদের বলয়ের বাইরে লোকজনকে বোঝাতে সক্ষম হচ্ছে না যে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না, এমনকি আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের বহু নেতাকর্মীও মনে করেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপিত হওয়া প্রয়োজন। আবার সরকার ইউনেস্কোকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না। অন্যদিকে তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দররক্ষা জাতীয় কমিটির সঙ্গে জড়িত বামশক্তিসমূহের অনঢ় অবস্থানের প্রেক্ষিতে ২৬ নভেম্বর ঢাকায় এ মহাসমাবেশ কার্যক্রম চলছে। বাম দলের নেতারা জানান, আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে ‘চল চল ঢাকা চল’Ñ সেøাগান দিয়ে বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকে রোড মার্চ করে ২৬ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে। তবে জাতীয় কমিটির অনেক নেতা মনে করেন, সরকারকেই তার অবস্থান থেকে সরে আসতে হবে, না হয় সরকারের ব্যর্থতার বোঝা গুরুভার হয়ে দেখা দিতে পারে। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি