নিজের স্ত্রীর ভোট নিয়ে সন্দিহান ট্রাম্প!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার নিউইয়র্কের একটি কেন্দ্রে ভোট দেন ট্রাম্প। সেসময় একই সাথে ভোট দিয়েছেন তার স্ত্রী মেলানিয়াও। কিন্তু মেলানিয়া ব্যালটে ছাপ মারার সময় ট্রাম্পের তাকানোর একটি ছবিই সোস্যাল মিডিয়া ভাইরাল। ছবিতে দেখা যায়, মেলানিয়া ভোট দেয়ার সময় ঘাড় বাকিয়ে সেদিকে তাকিয়ে আছেন ট্রাম্প। ইনডিপেন্ডেন্ট
ট্রাম্পের এই ছবি প্রকাশের সাথে সাথে সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানা মন্তব্য। আমান্ডা মারকোটি নামের একজন বলেছেন, ‘এই ছবি সব কিছু বলে দিচ্ছে।’
রোব নামের একজন আবার ট্রাম্প-মেলানিয়ার ওই সময়ের একটি কাল্পনিক কথোপকথন তৈরি করেছেন। কথোপকথনটি এই রকম-
মেলানিয়া: আমি অবশ্যই তোমাকে ভোট দিচ্ছি
ট্রাম্প: আমি জানি, আমি তোমাকে বিশ্বাস করি
মেলানিয়া: গুড
এরপর ট্রাম্পের আর কোনো কথা নেই।
শ্বেতাঙ্গ নারীদের ভোট বেশি পেয়েছেন ট্রাম্প: বিভিন্ন সময় নারীদের নিয়ে অশ্লীল ও বিরুপ মন্তব্য করেছেন মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই ট্রাম্প মার্কিন নারীদের ভোট একদমই পাবেন না বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এনবিসি
অবশ্য আশঙ্কা কাটিয়ে মার্কিন নারীদের ভোট ভালোই পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শ্বেতাঙ্গ নারীদের ভোট ঢালাওভাবে পড়েছে ট্রাম্পের ঘরে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসির তথ্য অনুযায়ী, রক্ষণশীল মার্কিন নারীদের ৭৮ শতাংশই ভোট দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এই দলের নারীদের মাত্র ১৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন ডেমোক্রেট হিলারি ক্লিনটনকে। আবার ৪৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী শ্বেতাঙ্গ নারীর ৫৮ শতাংশই ভোট দিয়েছেন ট্রাম্পকে। তাদের মাত্র ৩৯ শতাংশ ভোট দিয়েছেন হিলারিকে। আবার প্রোটেস্ট্যান্ট শ্বেতাঙ্গ নারীদের ৬৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে এই নারীদের মাত্র ৩২ শতাংশ হিলারিকে ভোট দিয়েছেন।
অবশ্য সব বয়সের শ্বেতাঙ্গ মার্কিন নারীদের ভোটে ট্রাম্প ও হিলারির পার্থক্য কম। এরপরও বেশি ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। সব বয়সের শ্বেতাঙ্গ নারীর ৫৩ শতাংশই ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। হিলারিকে ভোট দিয়েছেন ৪৩ শতাংশ। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ
হিলারি-ট্রাম্প কাউকে ভোট দেননি জর্জ বুশ : জর্জ বুশ সর্বশেষ রিপাবলিকান হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া জর্জ ডব্লিউ বুশ এবারের নির্বাচনে দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেননি। শুধু তাই নয়, এবার তিনি প্রেসিডেন্ট কাউকেই ভোট দেননি। ব্যালটে প্রেসিডেন্টের ঘর ফাঁকাই রেখেছেন তিনি। নিউইয়র্ক এ খবর জানিয়েছে। নিউইয়র্ক পোস্ট
প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের ভোট না দিলেও অন্যপদে ভোট দিয়েছেন বুশ। রিপাবলিকান দলের হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াই করলেও দলটির সাবেক প্রার্থী ও প্রেসিডেন্টদের সমর্থন পাননি ট্রাম্প। এদের মধ্যে রয়েছেন, জর্জ বুশের বাবা জর্জ এইচ.ডব্লিউ বুশ, মিট রমনি ও জন ম্যাককেইন। একমাত্র রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বব ডল সমর্থন দিয়েছেন ট্রাম্পকে। তিনি ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান টিকিট পেয়ে হেরেছিলেন নির্বাচনে।
ম্যাককেইন শুরুতে ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছিলেন। কিন্তু নারীদের নিয়ে ট্রাম্পের অবমাননাকর বক্তব্য প্রকাশের পর সমর্থন প্রত্যাহার করেন তিনি। আর রিপাবলিকান দলের প্রার্থীতার লড়াইয়ে জর্জ বুশের ছেলে জেব বুশের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন ট্রাম্প। ফলে জেব বুশ এবারের নির্বাচনে কাউকেই সমর্থন দেননি। ছেলের পাশে থেকে বুশও কাউকে প্রেসিডেন্ট পদে ভোট দিলেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রবীণতম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প:যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৭০ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। ২৮৯ ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে জয় পাওয়া ট্রাম্প ভোট পেয়েছেন ৫ কোটি ৭০ লাখ। অন্যদিকে ক্লিনটনের ভোট সংখ্যা ৫ কোটি ৬০ লাখ। বারাক ওবামা যখন দায়িত্ব নেন তখন তার বয়স ছিলো ৪৭। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম কমবয়সী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আর ট্রাম্প নিলেন প্রবীণতম হিসেবে। ইনডিপেন্ডেন্ট
আরেকটি দিক দিয়েও ট্রাম্প অনন্য। এর আগে সব প্রেসিডেন্টই গভর্নর, সিনেটর কিংবা সামরিক পরিচয় থেকে এসেছেন। ট্রাম্প আসলেন একদমই রাজনীতির বাইরে থেকে। এর আগে ১৯৫৩ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন করা ডুট আইজেনহাওয়ারের কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিলো না। তবে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এছাড়া গত ৭১ বছরে নিউইয়র্ক থেকে কেউ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেননি। সেই ধারাও ভাঙলেন ট্রাম্প। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ