কাফরুলে গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু
সুজন কৈরী: রাজধানীর উত্তর কাফরুলের একটি বাসা থেকে মনিকা আক্তার নামে এক কিশোরী গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ৬৭৮/৮ উত্তর কাফরুল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
ময়নাতদন্তের জন্য গভীর রাতে লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। নিহতের স্বজনদের ধারণা, মনিকা আত্মহত্যা করেনি। তাকে গৃহকর্তা এসএম রবিউল হত্যা করেছেন।
গৃহকর্তার বরাত দিয়ে কাফরুল থানার এসআই গতকাল আল আমিন বলেন, ঘটনার সময় গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী বাসার বাইরে ছিলেন। বিকালের দিকে বাড়িওয়ালা গৃহকর্তাকে ফোন করে মনিকার আত্মহত্যার সংবাদ জানায়। পরে তারা বাসায় এসে থানায় খবর দেয়। এ সময় তিনি টিম নিয়ে ওই বাসার রান্না ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলানো অবস্থায় মনিকার মরদেহ উদ্ধার করেন। এটি হত্যা না কি আত্মহত্যা- জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি এবং গৃহকর্তার নাম জানতে চাইলেও তিনি তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
নিহতের খালাত ভাই সবুজ ব্যাপারি বলেন, মনিকার বাবা আব্দুর রশিদ চৌকিদার। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল বাবুগঞ্জ এলাকায়। কুরবানির ঈদের পরপরই মনিকাকে ওই ভবনের তৃতীয় তলা এসএম রবিউল ইসলামের বাসায় কাজে দেয় তার বাবা-মা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যার খবর শুনে তিনি ওই বাসায় ছুটে যান। সবুজ বলেন, যারা আত্মহত্যা করে তাদের মূলত জিহ্বা বের হয়ে যায়। কিন্তু মনিকার ক্ষেত্রে সেই রকম কোনো লক্ষ্যণ দেখা যায়নি। আর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা বলেছে, সেক্সচুয়াল কোনো বিষয় আছে কি না তা তারা খতিয়ে দেখছেন। তবে এ ঘটনায় তারা মামলা করার কথা ভাবছেন বলে জানান সবুজ।
নিহতের খালা মনজু বেগম বলেন, খবর পেয়ে তারা গৃহকর্তার বাসায় গেলে গৃহকর্তা ও তার আত্মীয়স্বজনরা বলেন, ঝামেলা করে কি লাভ, আমরা মীমাংসা করে দিবো। প্রয়োজনে আমরা সবাই থানায় বসে সমাধান করবো। তারপর তাকে একটি কাগজ সই করতে বলেন গৃহকর্তা। কিন্তু তিনি তা করেননি। সন্ধ্যার দিকে মনজু বেগম অভিযোগ করেন, মনিকা আত্মহত্যা করার পেছনে কোনো কারণ নেই। এখানে কোনো একটা রহস্য রয়েছে। তার ধারণা, গৃহকর্তা থানা পুলিশের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। কেননা, বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য থানায় যেতে এসআই আল আমিন তাদেরকে একাধিবার ফোন করেছেন। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন