৬ সহ¯্রাধিক চাঞ্চল্যকর মামলা তদন্ত করছে পিবিআই
সুজন কৈরী: বর্তমানে সারাদেশে ৬ হাজারের অধিক চাঞ্চল্যকর মামলা তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এর মধ্যে শুধু পিবিআই ঢাকা মেট্রো’তে তদন্তনাধীন আছে তিন শতাধিক মামলা। এর বাইরে প্রতিদিন নতুন নতুন মামলা যোগ হচ্ছে। এর বিপরীতে এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমানে মোট জনবল সংখ্যা রয়েছে মাত্র ৯৭০ জন। লোকবল স্বল্পতার কারণে চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর তদন্তকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রজানায়, পিবিআইয়ের নেতৃত্বে আছেন একজন উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি)। আছেন দু’জন অ্যাডিশনাল ডিআইজি। যারা পিবিআইয়ের পূর্ব এবং পশ্চিম জোনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং তদন্তকাজ তদারকি করছেন। এছাড়াও ৯ জন পুলিশ সুপার (এসপি), ৭০ জন অ্যাডিশনাল এসপি, চারজন এএসপি, ২১০ জন ইন্সপেক্টর, ২৮০ জন এসআই, ১২১ জন এএসআই এবং ২৪২ জন কনস্টেবল। তবে এদের ভেতর প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ এএসআই ও কনস্টেবলরা তদন্ত কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন না।
এ বিষয়ে পিবিআইর ঢাকা মেট্রোর প্রধান বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, পিবিআই ঢাকা মেট্রো’তে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন একজন এসপি, দু’জন এএসপি, ৯ জন ইন্সপেক্টর, ১০ জন সাব-ইন্সপেক্টর এবং ১২ জন সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর ও ৩৫ জন কনস্টেবল। মামলার চাপ থাকলেও এই জনবল নিয়েই পিবিআই ঢাকা মেট্রো সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরপরেও আমরা সফলতাও পাচ্ছি। এ পর্যন্ত পিবিআই ঢাকা মেট্রো অন্তত শতাধিক চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়েছে, যে মামলাগুলো থানা পুলিশ, ডিবি ও সিআইডি তদন্ত করে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠার পর গত ৪ বছরে ঢাকা মেট্রো প্রায় পাঁচ শতাধিক মামলার তদন্ত শেষ করেছে। তিনি আরও বলেন, পিবিআইয়ে লোকবল বৃদ্ধির প্রস্তাব এরইমধ্যে পাস হয়েছে। সহসাই আমাদের লোকবল বাড়বে। মামলা তদন্তে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
জানা গেছে, একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে টানা তিন বছর সারা দেশে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত এবং বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষণ শেষে জমা দেয়া প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে প্রায় আনুমানিক ৭৫ শতাংশ মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা খালাস পেয়ে যান। শুধু এই একটি কারণেই অনেক আসামি মুক্তি পেয়ে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ২০১১ সালে পুলিশের পক্ষ থেকে ‘পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন’ নামে একটি পৃথক তদন্ত সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করা হয়। একই বছর বার্ষিক পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঞ্চল্যকর মামলা তদন্তে ইউনিট গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর পিবিআই গঠন করা হয়। পুলিশের নতুন এই বিভাগে যোগ দেয়া কর্মকর্তাদের অনেকে ইতোমধ্যে এফবিআই ও মার্কিন পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের (ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) আদলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে তৈরি এ বিশেষ ইউনিট মূলত খুন, ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, চোরাচালান ও কালোবাজারি, মানবপাচার, সাইবার ক্রাইম, ধর্ষণ, অস্ত্র এবং বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত মামলাসহ ১৫ ধরনের মামলার তদন্ত করবে। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন