দুর্নীতিবাজ দখলবাজদের আর নয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোয়নে বঞ্চিত হতে পারেন অর্ধশতাধিক সংসদ!
বিপ্লব বিশ্বাস: যে সব সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে বিগত দিনে নিজের আখের গুছিয়েছেন তারা এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোয়ন পাচ্ছে না। এ ধরনের দুনীর্তিবাজ দখলবাজদের বিরুদ্ধে একহাত নিতে যাচ্ছে দলটি। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গড়া সোনার বাংলায় এদের ঠাই হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। এ ধরণের ৫০ এর অধীক সংসদ সদস্যদের একটি তালিকা করা হয়েছে।
এত দিন দলের চাক ভেঙে মধু খেয়েছেন। মৌচাকে মৌ সংগ্রহের দায়িত্ব নেননি। আওয়ামী লীগের ব্ল্যাক লিস্টে এবার তাদের নাম। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াটা তাদের অনিশ্চিত। তাদের অনেকেই ভেবেছিলেন, শেখ হাসিনার ভাবমূর্তিতে ভর করে নির্বাচনী বৈতরণী পেরোবেন। সেটা আর হচ্ছে না। দুনীর্তিবাজ ও দখলবাজরা এবার আর হাসিনার এই কৃতিত্বের ভাগ পাবে না।
হাসিনার কৃতিত্ব। বিচক্ষণতা, দৃঢ়তা, সত্যনিষ্ঠা কর্মনিষ্ঠায় তিনি বিশ্বজনীন। তিন বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে ধীরে ধীরে দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উচ্চতার শিখরে। ৩৫ বছর ধরে দলের হাল ধরে। বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের রূপকার। তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দল ফুলে ফেঁপে উঠেছে। সদস্য সংখ্যা সীমাহীন। সেখানে কোনও ফাঁকিবাজি কি মানা যায়! কোনও কোনও সাংসদ আবার নিজের ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে এতটাই ব্যস্ত, রাজনীতিতে সময় দিতে পারেন না। রাজনীতি, ব্যবসা নয়। সেখানে লাভক্ষতির অঙ্ক চলে না। নিজেকে উজাড় করে দেওয়াটাই শর্ত। পাওয়া নয় দেওয়াটাই দায়িত্ব। কারও কোথাও গাফিলতি মানবেন না হাসিনা। আগাছার মতো অপদার্থদের ছাঁটবেন। আগামী নির্বাচনে টিকিট দেবেন না।
বাতিলের তালিকায় এমন অনেকে আছেন যারা প্রথমবার সাংসদ হয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। তারা পার পাবেন না। সাংসদ বাতিলের প্রাথমিক তালিকায় আপাতত চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জে, নোয়াখালি, যশোর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, নীলফামারি, লালমণির হাট, গাইবান্ধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরিশাল, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ব্রাহ্মণবেড়িয়া, কক্সবাজার, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, মেহেরপুর, মাগুরা, খুলনা, ভোলা, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, জয়পুরহাট, মৌলভিবাজার, হবিগঞ্জ, চাঁদপুর, ফেনী, রংপুর, লক্ষ্মীপুর উল্লেখযোগ্য।
২০১৪-র ৫ জানুয়ারি নবম সাধারণ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৪ প্রার্থী জয়ী। সংসদের ৩০০ আসনে এত জনের লড়াই ছাড়া সাফল্য কম কথা নয়। ভোট কী বুঝলেন না। অথচ ভোটে জিতলেন। সেটাই কাল হয়েছে অনেক সাংসদের। এ বার সেটা হবে না। গত বার প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে নামেনি। এবার নামছে, অগোছালো ঘর গোছাচ্ছে। ভারত বিদ্বেষকে ইস্যু করলে সুবিধে কিনা ভেবে দেখছে। ভোটের ময়দানে নেমে হারতে তারা রাজি নয়। ২০১৯-এর ২৮ জানুয়ারির তিন মাস আগে থেকে যে কোনও দিন ভোট। সময় আছে। আওয়ামী লীগের পিছিয়ে পড়া সাংসদরা চাইলে স্পিড বাড়িয়ে এগোতে পারেন। দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা গত এক বছর ধরে এসব দখলবাজ ও দুনীর্তিবাজদের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তাদের তথ্যে ও উঠে এসছে এসব দুনীর্তি পরায়ন সংসদ সদস্যদের নাম।
এ ব্যাপারে নব নির্বাচিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাম প্রকাশ করা না শর্তে বলেছেন, আমরা এবার জাতীয় সংসদে প্রার্থীবাছাইয়ে কঠোর হব। যে সব সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে দুনীর্তির অভিযোগ রয়েছে তারা এবার দলের টিকেট পাবে না। এখানোও এ ব্যাপারে কাজ চলছে বলে তাদের তালিকা দেয়া এ মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম