ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ৩০ শহরে পোর্টল্যান্ডে পুলিশের গুলিতে আহত ১, শপথ গ্রহণের দিন ১০ লাখ নারীর বিক্ষোভ প্রদর্শনের প্রস্তুতি
ইমরুল শাহেদ: প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের আধুনিক ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক অভাবনীয় সাফল্যই পেয়েছেন বলা যায়। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। নির্বাচনে জেতার পরপরই তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন এবং সকল মার্কিনি এক কাতারে আনারও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন তিনি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য উদ্ধৃত করে দি সান লিখেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সকল নাগরিককে আমি কথা দিচ্ছি, আমি সকলের প্রেসিডেন্ট হতে চাই। এটাই এখন আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ কিন্তু তার কথায় কেউ কর্ণপাত করছে না। যুক্তরাষ্ট্রের ২৫টি থেকে বেড়ে ৩০টি শহরে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল ছিল বিক্ষোভের তৃতীয় দিন। কিন্তু বিক্ষোভ এখন শান্তিপূর্ণ না থেকে সহিংস হয়ে উঠেছে। শনিবার পোর্টল্যান্ড রাজ্যের মরিশন ব্রিজে পুলিশের গুলিতে এক মার্কিনি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তি। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের সময়েও ব্যাপক বিক্ষোভের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় শপথ গ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার শপথ গ্রহণের সময় তিনি বড় ধরনের বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন বলে আভাস দিচ্ছে দি সান। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শপথ নেওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট বলতে পারবেন না। তাকে বলতে হবে তিনি নির্বাচিত। ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে ইলেকটোরালদের ভোট। তা গণনা করা হবে জানুয়ারিতে এবং তখনই আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হবে। তারপর ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের আনুষ্ঠানিক ক্ষমতাগ্রহণ করবেন। বিক্ষোভকারীরা ওই সময়ে লাখ লাখ মানুষের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তখন ওয়াশিংটনের রাস্তায় ১০ লাখ নারী বিক্ষোভ করবেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
পক্ষান্তরে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার খবর আসার পরপরই মঙ্গলবার রাত থেকে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তা ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। মার্কিন প্রশাসনের কেন্দ্র হোয়াইট হাউসের সামনেও বিক্ষোভ করেছেন এবং করছেন ট্রাম্পবিরোধীরা। ওয়াশিংটন ডিসিসহ অন্য অঙ্গরাজ্যতেও এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ওয়েস্ট কোস্ট, নিউইয়র্ক, বোস্টন, অস্টিন, সিয়াটল, ওকল্যান্ড, কালিফ, ফিলাডেলফিয়াসহ বিভিন্ন শহর। এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ডেনভার, মিনিয়াপোলিস, মিলওয়াউকি, পোর্টল্যান্ড, ওকল্যান্ডসহ বিভিন্ন শহরে। শুক্রবারও বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। আয়োজকরা দেশজুড়ে বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়েছেন। নিউইয়র্কের ইউনিয়ন স্কয়ারে বিক্ষোভের জন্য ইতোমধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল যাবে ট্রাম্পের বাড়ি, তার কর্পোরেট অফিসেও। আরও রয়েছে অনেক পরিকল্পনা। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নিউইয়র্কে বিক্ষোভের প্রচারণার আয়োজকরা তাদের ফেসবুক পোস্টে আহ্বান জানিয়েছেন, ‘রাস্তায় আমাদের সঙ্গে যোগ দিন! ট্রাম্প এবং তার গোঁড়ামি অ্যাজেন্ডা রুখে দাঁড়ান।’