সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল অপারেশন চালাচ্ছে : রিজভী
শাহানুজ্জামান টিটু: বিভেদ-বিভাজনের সর্বনাশা নীতি গ্রহণ করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল অপারেশন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, এদেশে হিন্দুদের উপর যত জুলুম-নির্যাতন, তাদের জোত-জমি দখল, তাদের দেবালয়সহ বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে তার জন্য দায়ী একমাত্র আওয়ামী লীগ।
গতকাল শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনের এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হিন্দু মহাজোটের নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে সর্ম্পূণভাবে আমরা একমত। কারণ সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু বলে আমরা মনে করি না। নাসিরনগর ইস্যুতে শুধু মন্ত্রী ছায়েদুল হক না, গোটা সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর এ মুহূর্তে পদত্যাগ দাবি করছি।
রিজভী বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তাদের ঐতিহ্য অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দল ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জানমাল, সম্ভ্রমের উপর ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে সাতক্ষীরায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি জবরদখল, নেত্রকোণার মদনে ম-পে পূজা কমিটির উপর হামলা, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে সংখ্যালঘু পরিবারকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, ২০১৩ সালে মুক্তগাছায় হিন্দু বাড়ি, সিলেটে মন্দিরে সম্পত্তি দখলের চেষ্টা, পাবনার সাঁথিয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রশ্রয়দাতা হিসেবে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে দেশের মানুষ সোচ্চার হয়। ফরিদপুরে হিন্দুদের জায়গা দখলের প্রতিবাদ করতে গেলে একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর নির্দেশে প্রবীর শিকদার নামে একজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। এছাড়াও কক্সবাজারের উখিয়া, রামুতে বৌদ্ধ মন্দিরে ব্যাপক হামলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণে তাদের সম্পত্তি দখল, লুটপাট, মঠমন্দির ভাঙচুর, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগসহ সব অপকর্মের হোতা হচ্ছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর আশ্রিত লোকেরা। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিবেদনের ক্ষমতাসীনদের সংশ্লিষ্টতা সুস্পষ্টভাবে উঠে এসে এসেছে।
রিজভী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে গাইবান্ধায় সাঁওতাল পল্লীতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের গুলি ও পিটিয়ে চারজন সাঁওতাল আদিবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা কেবল বর্বরোচিত ও অমানবিকই নয়, এটি শাসকগোষ্ঠীর পশুপ্রবৃত্তির এক নিষ্ঠুর ও নিকৃষ্ট উদাহরণ’। সম্পাদনা: উম্মুল ওয়ারা সুইটি