নভেম্বরেই জাসাসের কেন্দ্রীয় সুপার সিক্স
শাহানুজ্জামান টিটু: বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলোকে সাংগঠনিকভাবে সংগঠিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে এবার দলটির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি নভেম্বর মাসেই নতুন কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে এমনটা আভাস পাওয়া গেছে।
ইতোমধ্যে অঙ্গ সংগঠনগুলোর মধ্যে যুবদলের আগের কমিটির সবকিছুকে ঠিক রেখে শুধু সভাপতি পদে নতুন নেতৃত্ব আনা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সুপার সিক্স ঘোষণা ও মহিলা দলেরও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামের কথা মাথায় রেখেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের নিয়ে জাসাসের নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। জাসাসের নেতৃত্বে আসতে পারেন এমন নেতাদের তালিকা করার জন্য দলের এক সিনিয়র নেতাকে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি একটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছেন। তবে নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন জাসাসের বর্তমান সভাপতি এম এ মালেক। তিনি বলেন, ম্যাডাম যদি আমাকে সভাপতি পদে যোগ্য মনে করেন তাহলে থাকব। বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রমের অচলাবস্থার বিষয়টি অস্বীকার করলেও তিনি বলেন, গত এপ্রিল-মে মাসে আমরা প্রোগ্রাম করেছি। বিএনপির কাউন্সিলের পর থেকে কেন্দ্রীয় কোনো কর্মসূচি ছিল না। শুধু আমাদেরটা না সব স্টপ হয়ে আছে।
যাদের নাম শোনা যাচ্ছে : সভাপতি পদে সাবেক চিত্র নায়ক আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, একুশে পদকপ্রাপ্ত ছড়াকার আবু সালেহ, বুলবুল ললিতকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা রাহিজা খাতুন ঝুনু ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনির খান। তবে উজ্জ্বল ও মনির খান বিএনপির নির্বাহী কমিটিতে সম্পাদকীয় পদ পেয়েছেন। এক নেতা এক পদ-এর কারণে তাদের নতুন কমিটিতে আশার সম্ভাবনা অনেকাংশে কম। তারপরও তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক জাসাস ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদার, চিত্রনায়ক হেলাল খান, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক। এছাড়া কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, রিজিয়া পারভীন, জাসাস উত্তরের আহ্বায়ক ডা. আরিফুর রহমান মোল্লা, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক খালেদ এনাম মুন্নাও গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন বলে জানা গেছে।
নতুন কমিটি বিষয়ে রাহিজা খানম ঝুনু বলেন, আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে কমিটিতে ভালো লোক ও যারা দলের জন্য কাজ করবে তাদের আনতে হবে। না হলে আগের মতোই অবস্থা হবে। বর্তমান জাসাস কমিটির কার্যক্রম নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদার বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার রাজনীতি করি, অন্য কারোটা করি না। তাই নেতৃত্বের আশায় আছি। পাব কি না জানি না। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।
তিনি বলেন, পদের জন্য রাজনীতি করি না। বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে দায়িত্ব দেবেন তা পালন করতে প্রস্তুত।
২০১০ সালের ১০ ডিসেম্বর এমএ মালেককে সভাপতি এবং কণ্ঠশিল্পী মনির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৪৫ সদস্যবিশিষ্ট বিশাল কমিটির অনুমোদন দেন তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব। এর পাশাপাশি ৩৩ জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীকে সম্মানিত উপদেষ্টা রাখা হয় কমিটিতে। পরবর্তী সময়ে এ কমিটির ৪২ জনের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। আর ১০ থেকে ১৫ জন নেতৃত্ব গ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করে চিঠিও গ্রহণ করেননি। এ বিশাল নেতানির্ভর কমিটি গঠনের পরও সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে নতুন নতুন সদস্যকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমান কমিটি দীর্ঘসময় দায়িত্বপালন করলেও একটি পূর্ণাঙ্গ গঠনতন্ত্রও তৈরি করতে সক্ষম হননি।
সংগঠন সূত্র জানায়, সারাদেশের ৬৪টি জেলাসহ বিভাগীয় এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকা ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সংগঠনের কমিটি থাকার নিয়ম থাকলেও তা নেই। যেগুলো রয়েছে তাও কেন্দ্রীয় কমিটির মতো শতভাগ মেয়াদত্তীর্ণ। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম