ফেসবুকে বাংলাদেশ…
পাহাড় থেকে সমতল, রক্তের ওপরই ‘উন্নয়নের’ কাহিনী!
আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ
আবারও রক্ত দিয়ে ভিজল বাংলাদেশের জমি। সাঁওতালদের রক্তের দাগ উত্তরবঙ্গে আরও অনেকখানে পাওয়া যাবে, অট্টালিকা, পর্যটন…। এভাবে ক্ষেতে লাশ পড়ে থাকার ঘটনা আরও ঘটেছে। আর রামু, সাঁথিয়া, নাসিরনগর… হিন্দু-বৌদ্ধ মানুষদের দিবারাত্র নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি সেগুলোও অবিরাম। আর পাহাড়ে? ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পের ঝলকানিতে পাহাড়ি মানুষের চেহারা আবছা হয়ে যায়। রাষ্ট্রের সব বাহাদুরি তো গরিবদের ওপরই, আর সে যদি জাতিগত বা ধর্মীয় পরিচয়ে ভিন্ন হয়, যদি হয় নারী তাহলে শিকার হিসেবে আরও ভালো। তাদের জমি, তাদের শ্রম, তাদের শরীর, তাদের সৃষ্টি, তাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন সব কেড়ে নেবার আয়োজনকেই ‘উন্নয়ন’ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়, তাদের দমন করবার সব ব্যবস্থাকেই বলা হয় ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষা’। বাঁশখালী থেকে গোবিন্দগঞ্জ, রক্তের দাগ… কাহিনীর মধ্যে তফাৎ কী? মানুষ নিজের জমি নিজের কাছে রাখবে, রাষ্ট্র দেবে না, তার প্রবল শক্তি দিয়ে দখলদারের পাশে দাঁড়াবে। পাহাড় থেকে সমতল, রক্তের ওপরই ‘উন্নয়নের’ কাহিনী!
লোকসানি কারখানার জন্য মানুষের…
সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, পরিচালক বার্তা, একাত্তর টিভি
বাংলাদেশে সরকারি কলকারখানাগুলো যে পরিমাণ লোকসান দেয় তা রীতিমতো অর্থনীতির রক্তক্ষরণ… এর মধ্যে চিনিকলগুলো আরও বেশি… লোকসানি কারখানার জন্য মানুষের জীবন আর সম্পদ নিয়ে নেওয়া!
মেয়র সাইদ খোকনকে বলছিÑ প্লিজ! কুকর্মগুলো বন্ধের উদ্যোগ নিন!
গোলাম মাওলা রনি, কলামিস্ট ও সাবেক সাংসদ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা নগরবাসীর জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছেন। বাড়ি বা ফ্ল্যাটের কর কমিয়ে দেবার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতি ফ্ল্যাট থেকে পাঁচ/দশ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করে নিচ্ছেন। ধানমন্ডির নায়েম রোডে ১৫৪৩ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটে আমি বাস করি। আমাদের বিল্ডিংয়ের ২৩টি ফ্ল্যাটের মালিকের নিকট থেকে সংশ্লিষ্ট কর কর্মকর্তা হুমকি-ধামকি দিয়ে বিরাট অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
আমি দিইনি বলে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে গিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানলাম, নায়েম রোডের প্রত্যেকটি বাড়ির ছোট-বড় ফ্ল্যাট থেকে গড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করা হয়েছে।
প্রিয় মেয়র! প্লিজ বিষয়টি দেখুন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন।
আক্রান্ত সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ান
ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন, চিকিৎসক ও কলামিস্ট
গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লিতে এতবড় একটা ঘটনা ঘটল পুলিশের উপস্থিতিতে, প্রশাসনের মদদে তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হলো, তিনজন মানুষকে খুন করা হলো, অসংখ্য মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা হলো, অথচ বাংলাদেশের প্রধান পত্রিকাগুলোতে এ সংক্রান্ত কোনো খবর চোখে পড়ল না। আমি কি মিস করেছি নাকি ঘটনাটি পত্রিকায় শিরোনাম হবার মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়?
সাঁওতালদের উপর নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করছি। সরকার সমর্থক স্থানীয় রাজনীতিবিদদের আচরণ যেন দস্যুর মতো না হয়। অন্যথায়, ভবিষ্যতে সমগ্র দলকেই হয়তো অনেক বড় মাশুল দিতে হবে। যত উন্নতমানেরই হোক না কেন, এক বালতি দুধ নষ্ট করার জন্য এক ফোটা চোনাই যথেষ্ট। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়।
ভাগ্য ভালো, ক্ষমতাসীনরা হেরেছে…
প্রভাষ আমিন, অ্যাসোসিয়েট হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ
এবারের মার্কিন নির্বাচন যে বাংলাদেশ স্টাইলে হচ্ছে, সেটা আমি আগেই লিখেছি। নির্বাচনের আগে দুই প্রার্থীর পরস্পরকে গালিগালাজ, ফল তার পক্ষে না এলে ট্রাম্পের না মানার হুমকি এবং অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান তো ছিলই, ছিল এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ, এমনকি জাল ভোটও। নির্বাচনের পরেও এবার বাংলাদেশি স্টাইলÑ বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা দাহ, এমনকি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের বড় উৎস ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবি উঠেছে, ব্রেক্সিটের আদলে ক্যালেক্সিটের। ভাগ্য ভালো, ক্ষমতাসীনরা হেরেছে, নইলে এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উঠত সন্দেহ নেই।
তবে শেখারও আছে আমাদের। নেতারা সব নির্বাচনপূর্ব তিক্ততা ভুলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। হিলারি অভিনন্দন জানিয়েছেন ট্রাম্পকে, ওবামা হোয়াইট হাউসে ডেকে আপ্যায়ন করেছেন। আর ক্ষমতায় গেলে যে হিলারিকে জেলের ভাত খাওয়ানোর হুমকি দিয়েছিলেন, তার প্রতিই কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আমেরিকা কি সব আইডিয়া
বাংলাদেশ থেকে নেওয়া শুরু করল?
শরিফুল হাসান, সাংবাদিক
আম্রিকা কি সব আইডিয়া বাংলাদেশ থেকে নেওয়া শুরু করল? নয়তো ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে পুলিশ বালুর ট্রাক আনলো কেন? নির্বাচনের পরদিন কইছিলাম, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কৌশলগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এরা দেখি লজ্জায় সহায়তা না নিয়ে আইডিয়া চুরি করতাছে। আমার মনে হয়, অবস্থা পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ থেকে একটা প্রতিনিধিদল পাঠানো জরুরি। কি বলেন ভাইলোক?
তবুও আমি হুমায়ূন ভক্ত
শেরিফ আল সায়ার, সাংবাদিক
হুমায়ূন আহমেদের মতো পাঠকজনপ্রিয় লেখক বাংলাদেশের সাহিত্যে আর কেউ ছিলেন বলে মনে হয় না। দুই বাংলা মিলে অবশ্য এমন জনপ্রিয়তা থাকতে পারে, কিন্তু একক বাংলাদেশের হিসেবে হুমায়ূন অনন্য। তার কট্টর সমালোচনা সবসময় করেছি। বইমেলায় যেদিনই আসতেন তখন পাঠকের ভিড় লেগে থাকত। লাইন লাগত এক ঝলক দেখার, একটা বই কেনার এবং সেই বইয়ে একটা অটোগ্রাফ নেওয়ার। আমি কখনো সেই লাইনে যাইনি। মনে মনে বলেছি, সস্তা সাহিত্যের পাঠক সবাই।
সত্যিকার অর্থে হুমায়ূন শেষের দিকে সস্তা হয়েছেন বটে, কিন্তু ওই সস্তায় মানুষ গা ভাসিয়ে পড়েছে। পাঠক হয়েছে। আমি তো হুমায়ূনের নীল হাতি দিয়ে শুরু করেছি। পাঠক হয়েছি। পড়েছি। তার বই পড়ার মধ্যে যে বিনোদন আমি পেয়েছি তা অন্যকোনো লেখক সহজে আমাকে দিতে পারে না। সহজ ভাষায়, সহজ গল্পে কীভাবে পাঠকের হৃদয়ে ঢুকে যেতে হয় সেটা ছিল হুমায়ূনের এক ম্যাজিক। ওই ম্যাজিকটা কেউ কখনো দেখাতে পারবে কিনা সন্দেহ।
হুমায়ূন আহমেদের বহু উপন্যাস, গল্প পড়ে আমি কেঁদেছি। আবার বহু উপন্যাস, গল্প পড়ে বলেছি, পাঠকের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তিনি। তবুও আমি হুমায়ূন ভক্ত। আমি তার আরও লেখা পড়তে চেয়েছিলাম। বইয়ের পাঠক কীভাবে তৈরি করতে হয়, এই সূত্র একমাত্র হুমায়ূনই জানতেন। নাটক, সিনেমাতে তো তিনি আরও অনন্য। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে যখন হুমায়ূন আহমেদ তখনো তিনি ছিলেন তার মতোই। জীবনসংগ্রামে গড়া এই হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের বাংলা সাহিত্যের একজন রাজা। যে রাজার অনেক সমালোচনা থাকবে, প্রশংসা থাকবে। তবুও পাঠক ঠিকই তাকে ভালোবেসে যাবে। কারণ এইদেশে অধিকাংশ ঘরে আর কেউ থাকুক আর না থাকুক। হুমায়ূন আহমেদ ঠিকই থেকে যাবেন।
শুভ জন্মদিন…
এই অশুভ শক্তিকে রুখতে হবে
শেখ আদনান ফাহাদ, সহকারী অধ্যাপক, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, জাবি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত হিন্দুদের একাংশের সাম্প্রদায়িক নোংরা চেহারা আবার প্রকাশিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গীয় হিন্দু সাম্প্রদায়িকদের মুখপাত্র ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকা এর একটি প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটকে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর বলে বর্ণনা করেছে। বলেছে বুয়েটের ৭০ শতাংশ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী নাকি জঙ্গি। ১৯১৪-তে যখন নাথান কমিশন হয়েছিল তখন এরা বলত, ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় না দূর ছাই! এ তো একটা মাদ্রাসা হবে। ৪৭ এ পাকিস্তানিদের সঙ্গে মিলে আমাদেরকে পাকিস্তানে ঠেলে দিল। আমাদের দার্জিলিং, কলকাতা দখল করল। এখন নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে, বুয়েটকে কলঙ্ক দিতে। এই অশুভ শক্তিকে রুখতে হবে।