গাইবান্ধা সাঁওতাল পল্লীতে সংঘর্ষ ঘটনা পর্যবেক্ষণে রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংস্থার নেতারা
রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধা: সকাল থেকেই গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লী জয়পুর ও মাদারপুর এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। এদিন সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমি নিয়ে সাঁওতালদের সঙ্গে মিল মালিক সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি প্রতিনিধিদল। এছাড়াও পরিদর্শন ও ঘটনা পর্যবেক্ষণে আসেন বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। গতকাল রোববার আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদল স্থানীয় লোকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে মাদারপুর মিশন গির্জা মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে যোগ দেন। এসময় ঐক্য ন্যাপ সংগঠনের আহবায়ক পংকজ ভট্টাচার্য, মানবাধিকার ও নারী নেত্রী খুশি কবির, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মো, আবুল বারাকাত প্রমুখ পৃথক পৃথক সমাবেশে স্থানীয়দের সঙ্গে ঘটনা বিষয়ে কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশের শুরুতে স্থানীয় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা তাদের দুঃখ দুর্দশা এবং অসহায় অবস্থা তুলে ধরেন নেতৃবৃন্দের কাছে। তাদের উপর যে অমানবিক নির্যাতন, হত্যা, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট হয়েছে তার প্রতিকার দাবি করেছেন তারা। সেই সাথে বাপ-দাদার জমি ফিরিয়ে দেয়ারও তারা দাবি জানান।
সবাবেশে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসন করা হবে। ভূমিহীনদের কৃষি জমি দেওয়া হবে। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ব্যবসা করার জন্য পুঁজি দেওয়া হবে। সেইসাথে শিক্ষা বিস্তারের জন্য এলাকায় আরও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক টিপু মুন্সি এমপি, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি প্রমুখ। ওই সমাবেশে স্থানীয় সাঁওতাল নেতৃবৃন্দের মধ্যে তাদের সমস্যা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন রমেনা কিসকু, রিটা মারডি, মেথিয়াস মারডি, বাহানাজ টুডু, এমেলী সরেন ও শ্যামল মারডি প্রমুখ।
অপরদিকে মানবাধিকার ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত পৃথক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ড. মো. আবুল বারাকাত, শারমিন মুর্শিদ, সনজিব ব্রম, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল ভট্টাচার্য, যুব ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল আল কাফি রতন, সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য মিহির ঘোষ, ফাদার ড. সিভাস টিয়ান টুডু প্রমুখ।
ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, সাঁওতাল বসতি উচ্ছেদে যে ঘটনা ঘটেছে তা মানবতাবিরোধী অপরাধ। ৭১’র ন্যায় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারীর সম্ভ্রমহানী, হত্যা সবকিছুই করা হয়েছে। এ নির্মমতা মেনে নেয়া যায় না।
এদিকে সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ভূমি উদ্ধার কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ফিলিমন বাসকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে বাপ-দাদার জমি ফিরিয়ে পাওয়ার ব্যাপারে সেরকম কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। আমরা জমির ব্যাপারে তাদের কাছ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করেছিলাম। সম্পাদনা : আনিসুর রহমান তপন