সিভিল এভিয়েশনে নিয়োগ কেলেঙ্কারি আদালতের আদেশ অমান্য করে জনবল নিয়োগের পাঁয়তারা
এইচএম দেলোয়ার: উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ(সিএএবি)নিয়োগ কেলেঙ্কারির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পত্রিকায় নিয়োগ সার্কুলার জারি করে জনবল নিয়োগের পাঁয়তারা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। উচ্চ আদালত স্ব স্ব পদে চাকরি স্থায়ীকরণের আদেশ দিলেও সিএএবির সদস্য প্রশাসন ও পরিচালক প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কারো ক্ষেত্রে আপগ্রেডেশন এবং কারো কারো ক্ষেত্রে নিম্ন আপগ্রেডে চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়- চৌকিদার পদে কর্মরতদের স্টেনোগ্রাফার, স্টেনো টাইপিস্ট , স্টোরকিপার, ফায়ার অপারেটর পদে পদায়ন করে লাখ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছে বলেও অভিযোগ করেছে সাধারণ কর্মচারিরা । এ ক্ষেত্রে বিমান মন্ত্রীর আদেশকেও থোরাইকেয়ার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চৌকিদারদের তাদের গ্রেড ১৬-১৭ থেকে কমিয়ে ১১-১২ গ্রেড করে ৭ গ্রেড উন্নীত করা হয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে কোনো কোনো কর্মচারি শিক্ষাগত সনদের ক্ষেত্রে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দেখিয়ে এমনকি ফৌজদারি মামলার আসামিকেও আপগ্রেড করে চৌকিদার থেকে স্টেনোটাইপিস্ট পদে পদায়ন করা হয়েছে। পরে অবশ্য মামলা থেকে তাদের নাম বাদ পড়েছে। সিএএবির নিয়োগ বাণিজ্য ও নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি। সিএএবির এই নিয়োগ কেলেঙ্কারি ও উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে। সিএএবিতে এই নিয়োগ কেলেঙ্কারির ব্যাপারে হাছিনা আাকতার নামের এক কর্মচারি সিএএবির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করার পরও সিএএবি কর্তৃপক্ষ তার সুবিচার করেনি, তার ফরিয়াদ আমলে নেয়নি। হাছিনা সুবিচারের আশায় সিএএবির প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি অভিযোগ করে বলেন , জুনিয়রকে সিনিয়র করে চাকরির ক্ষেত্রে আপগ্রেড করা হয়েছে। যারা কম্পিউটার অপারেট করতে পারে না তাদেরকে সাঁটলিপিকার , সাঁটমুদ্রাক্ষরিক পদে পদায়ন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আদালতের প্রথম আদেশ পুরোপুরি এবং দ্বিতীয় আদেশে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সিনিয়রটি অনুসরণ করার কথা বলা হলেও সিএএবি কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি।
সিএএবিতে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারি অভিযোগ করে বলেন , সিএএবির সদস্য ( প্রশাসন ) আকম শাহিদুর রহমান ও সদ্য বদলিকৃত পরিচালক ( প্রশাসন ) গৌতম কুমার দাস এবং প্রশাসন বিভাগের কতিপয় কর্মচারিরা যৌথ সিন্ডিকেড জনপ্রতি ৭-৮ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে কোটি টাকার বাণিজ্য করে সিনিয়রকে জুনিয়র , জুনিয়রকে সিনিয়র, ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত চৌকিদারদের আপগ্রেড করে স্টেনোটাইপিস্ট , স্টেনোগ্রাফার, স্টোরকিপার পদে পদায়ন করা হয়েছে। যা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করলেই সত্যতা বের হয়ে আসবে। কর্মচারিরা সিএএবির এই নিয়োগ কেলেঙ্কারির ব্যাপারে সিএএবিতে সদ্য যোগদানকৃত চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করে তার নজরে আনবেন বলে জানা গেছে। কর্মচারিরা দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক ) চেয়ারম্যার বরাবর লিখিত অভিয়োগ করবেন বলেও তারা জানান।
অপর দিকে সিএএবির কর্মচারিদের দায়েরকৃত আরেকটি মামলায় উচ্চ আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে সিএএবিতে জনবল নিয়োগ করার জন্য সিএএবির পরিচালক (প্রশাসন) গত ১১ নভেম্বর দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার জনবল নিয়োগে এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। যার স্মারক নং- সিএএবি/ইস্টাব/ আর-২৬০/২০১৫ ( অংশ-১)/৩৭৯০ তারিখ- ০১-১১-২০১৬। উচ্চ আদালতের রিট পিটিশন মামলা নম্বর- ১০০১/২০১৩ এবং ১১০৭৬/২০১২ ।
আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে জনবল নিয়োগ করার ব্যাপারে সিএএবির উপপরিচালক ( প্রশাসন ) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম বলেন, পদ খালি হওয়ায় দক্ষ জনবল নিয়োগের জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু