হলি আর্টিজানে ব্যস্ত শ্রমিক, মুছে ফেলা হচ্ছে রক্তের দাগ
মবিনুর রহমান: রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ পরিষ্কারে ব্যস্ত সময় পার করছেন ৫০ জন শ্রমিক। ধূয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে রেস্টুরেন্টের প্রতিটি সিঁড়ি ও ফ্লোরে লেগে থাকা রক্তের দাগ। এছাড়াও রেস্টুরেন্ট ওয়ারিং, দরজা, জানালা মেরামত ও নতুন ফার্নিচার আনা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির সামনে গেলে দেখা যায়, বেকারিটি আবারো চালু করার তোড়জোর শুরু হয়েছে। ভিতরে ৫০ জনের মতো কর্মচারী কাজ করছে। ধোয়া, মোছা ও মেরামতের কাজ চলছে।
রেস্তোরাঁয় কর্মরত সেলিম নামে এক কর্মচারী জানায়, রোববার সকাল থেকেই বেকারিতে ধোয়া, মোছা ও মেরামতের কাজ করছে তারা। মেরামত কাজের জন্য সোমবার সকালে ট্রাকে করে বিভিন্ন জিনিসপত্র আনা হয়েছে।
রেস্তোরাঁটির নিরাপত্তায় মূল প্রবেশপথে পুলিশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন বেশকিছু পুলিশ সদস্য। ভিতরে মিডিয়া কর্মীদের ঢুকতে বা ছবি নিতে দেওয়া হচ্ছে না। বেকারির ভেতরে মেরামত কাজ করার জন্য নেওয়া হচ্ছে মালামাল। এছাড়া কর্মচারীরা যাতায়াত করছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী গতকাল সোমবার দুপুরে বলেন, তদন্তের স্বার্থে বেকারিটি আমরা পুলিশের হেফাজতে রেখেছিলাম। রোববার দুপুরে মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, হস্তান্তর প্রক্রিয়ার পর আমাদের দায়িত্ব শেষ। এখন যে কোনো দিন মালিক এটি পুনরায় চালু করতে পারবেন।
হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার প্রায় সাড়ে চার মাস পর গত রোববার বিকাল ৪টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন আহমেদ বেকারির মালিক শাহাদাত হোসেনকে মালামালসহ বাড়িটি বুঝিয়ে দেন। গত জুলাইয়ে হামলার পর থেকেই বাড়িটি পুলিশের হেফাজতে ছিল। সাধারণের প্রবেশও নিষিদ্ধ ছিল।
হলি আর্টিজানের পাশে ফ্লোরিয়া বাড়িতে কেয়ারটেকারের কাজ করেন সেলিম রেজা। তিনি বলেন, হলি আর্টিজানের সামনে দায়িত্বরত ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্য ফেরদাউস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই আমরা সদা তৎপর। নিরাপত্তার জন্য গুলশানের-২ এর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে প্রায় ১৩টির মত পুলিশি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বিদেশিদের নিরাপত্তা দিতে এটি আগেও ছিল এখন আরও জোরদার করা হয়েছে।
গত ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানের রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে সন্ত্রাসীরা। সেখানে উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের হামলায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
হামলার প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ২ জুলাই সকালে রেস্তোরাঁয় ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করে যৌথ বাহিনী। এরপর সেখান থেকে ২৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ইতালীয় নয়জন, সাতজন জাপানি, তিনজন বাংলাদেশি এবং ভারতীয় একজন ছিলেন। বাকি ছয়জন হামলাকারী বলে জানায় সেনাবাহিনী।
এই ঘটনায় নিহত জঙ্গিরা হলেন মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও সফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু