ফেসবুকের দেয়ালজুড়ে…
জানতে ইচ্ছে করে, যাদের গু-ারা এই মুক্তিযোদ্ধাকে মেরেছে…
সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, পরিচালক বার্তা, একাত্তর টিভি
দলীয় লোকদের হামলায় গুরুতর আহত ঝিনাইদহের শৈলকূপার মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার আহমেদ মৃধার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা…। জানতে ইচ্ছে করে, যাদের গুন্ডারা এই মুক্তিযোদ্ধাকে মেরেছে, প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ কি সেই জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের এতটুকু লজ্জা দেয়?
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ইজ কামিং
অজয় দাশগুপ্ত, সিডনি প্রবাসী, কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক
বেওয়া সরনকে চেনেন? কীভাবে চিনবেন, ওর নামে জোস নেই, মালাউনও না। এই লোক গত সাতদিনে চারবার ভাত খেয়েছে। ভাবছেন অভাবে? জী না। ডিজিটাল দেশে চালের দাম দশ টাকা কেজি। এ মানুষটি আমাদের ভয়ে বেরোতে পারছে না। বেরোলেই তাকে আমরা মারব। ওরা বলছে, একবার বেরোতে দিলেই দেশ ছেড়ে চলে যাবে। ভিটেমাটিও লাগবে না।
এমন দেশের নামই তো ডিজিটাল বাংলাদেশ। হিন্দু থাকবে না। বৌদ্ধ থাকবে না। খ্রিস্টান থাকবে না। আদিবাসী থাকবে না। সাঁওতাল থাকবে না। উদার মুসলমানও থাকতে পারবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ইজ কামিং। খোয়াবের দেশ আসিতেছে।
সাঁওতাল মানুষগুলো নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে দিল যে!
মনজুরুল আলম পান্না, সাংবাদিক
মনটা খুব ভালো। প্রশ্ন উঠতে পারে, ‘এই সমাজে তো শয়তান আর ফেরেশতা ছাড়া কেউ ভালো থাকতে পারে না’। আমি ভালো আছি কী করে?
কারণ, সাঁওতাল মানুষগুলো নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে দিল যে! ভুখা মানুষগুলো সরকারি ত্রাণ প্রত্যাখান করে জানিয়ে দিলেন, তীব্র প্রতিবাদের ভাষা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। মেরুদ- কী করে সোজা করে বাঁচতে হয়, তা আবারও বুঝিয়ে দিলেন নিষ্পেষিত আদিবাসীরা। জয় সাঁওতাল…
সামরিক শক্তিতেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ
মোহাম্মাদ এ আরাফাত, শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
বাংলাদেশের নৌবাহীনিতে প্রথমবারের মতো যুক্ত হলো সাবমেরিন। চীনের কাছ থেকে আজ দুটি সাবমেরিন হস্তান্তরিত হয়েছে বাংলাদেশের কাছে। সামরিক শক্তিতেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জয় বাংলা।
আমি চাঁদ দেখছি না!
আনিস আলমগীর, হেড অব নিউজ, এশিয়ান টিভি
চাঁন্দের সাইজ বড়, আলো বেশি… তাতে কি যায় আসে। মনে রঙ থাকলে সাইজ আর আলো কোনো ইস্যু না। রঙ না থাকলেও একই কথা। চাঁদ সেই চাঁদই আছে। আমি চাঁদ দেখছি না!
কিছু ফেলে গেলেন কি, জনাব!
শরিফুজ্জামান শরিফ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
‘এই বাংলায়, হিন্দু-মুসলমান-বাঙালি-অবাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই, তাদের রার দায়িত্ব আমাদের। আমাদের যেন বদনাম না হয়।’ ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের একটা অংশ এটা। সারাদেশে উন্নয়নের নানা চেষ্টা চলছে। প্রকল্প পরিকল্পনা নিয়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি শুনছেন। উন্নয়ন হচ্ছে না মোটেও সেটা স্বীকার করি না। তবে যতটা ম্যাক্রো লেভেলে উন্নয়ন দেখছেন, মাইক্রো লেভেলে ততটা না। মাইক্রো লেভেলের পরিবর্তনের পেছনে রাষ্ট্রীয় নীতির থেকে ব্যক্তি উদ্যোগের ভূমিকা বেশি।
খোঁজ নেন, আপনার বাড়ির পাশের এক সময়ের নিত্য অনাহারি মালেক মোল্লা তিন বেলা খেতে পায়, তার সন্তান স্কুলে যায় এটার পেছনে মালেক মোল্লা তার স্ত্রীর ভূমিকা বা অবদানটা বড়। রাষ্ট্র এখানে বড় ভূমিকা রাখেনি বরং কোথাও কোথাও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার আসি সাত মার্চের ভাষণ প্রসঙ্গেÑ বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বেন, বলছেন সেখানে, মাইকে ঘোষণা দিয়ে হিন্দুর বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য যে হরিদাসীর সিঁথির সিঁদুর মুছেছিল, সেই হরিদাসী জীবনের ভয়ে রাতের আঁধারে আধো চেনা পথ ধরে সীমান্ত পাড়ি দেয়।
এই পথে সে আরেকবার সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে, ৭১ সালে। তখন বন্দুক ছিল ইয়াহিয়ার বাহিনীর হাতে, কিন্তু আজ? উন্নয়নের জন্য মানুষের ভিটে কেড়ে নেন। বাঁধা দিলে বন্দুক…। সাঁওতালের জমি কেড়ে নিতে, বিলের ভিতর বিমানবন্দর বানাতে, বিদ্যুৎকেন্দ্র বানাতে, চা বাগান থেকে শ্রমিক তাড়াতেÑ বন্দুক…। আচ্ছা, গুলশান লেক তো জনগণের সম্পত্তি। যারা ওটা দখল করে আছে, যারা হাতিরঝিল দখল করে আছে। আদালতের নির্দেশ থাকার পরেও, তাদের তাড়াতে বন্দুক? কখনোই না।
আজ সাঁওতাল, আদিবাসী, হিন্দু, ভূমিহীন, চা শ্রমিক, বস্তির মানুষ, পাটকল শ্রমিক কেউ আপনার বন্ধু নয়। পুলিশ, বন্দুক, লুটেরা, বড়লোক, তেতুল হুজুর ছাড়া সবাই যেন প্রতিপ। আজ উচ্চআদালত নির্দেশ দিয়েছে মেডিকেলে চিকিৎসাধীন সাঁওতালের হাত পা থেকে ডান্ডাবেড়ি খুলে দিতে। হাসপাতালের বিছানায় থাকা অসুস্থ, দুর্বল, নিরীহ মানুষের উপর ‘রাষ্ট্রের হেডম’ দেখাতে তার হাতে পায়ে ডান্ডাবেড়ি।
ঝোলার ভিতরে থাকা সোনার বাংলার কিচ্ছার পুঁথি, চেতনার কিচ্ছার পুঁথি, অসাম্প্রদায়িকতার কিচ্ছার পুঁথি থেকে নাসিরনগর, গাইবান্ধা, হবিগঞ্জ, যশোরে কিছু ফেলে এলেন কি, জনাব!